সব
মারুফ হাসান, সিলেট ব্যুরো,
সুনামগঞ্জ ও সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় ভারতের পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতে নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর ও কানাইঘাটসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পাহাড়ি ঢলের ফলে হাওরের ফসলি জমি ও বসতবাড়ির ওপর দেখা দিয়েছে নতুন করে দুর্ভোগ।
রোববার (১ জুন) সকালেই সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বড়দল নতুহাটি ও পুরাতন হাটির মধ্যবর্তী খাল ভেঙে যাদুকাটা নদীর পানি প্রবেশ করে মাটিয়ান হাওরে। স্থানীয় ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার জুয়েল আহমদ জানান, পানি প্রবেশের কারণে বড়দল গ্রামের কয়েকটি ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ১১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের আনোয়ারপুর ব্রিজের পূর্ব পাশে সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে, যা যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানিয়েছেন, নদীগুলোর পানি এখনো বিপদসীমার নিচে রয়েছে। তবে টানা বৃষ্টির ফলে আগামী ২-৩ দিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে, সিলেটেও পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টির কারণে নগরীসহ কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে গোয়াইনঘাট-রাধানগর সড়কের একটি অংশ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ জানিয়েছেন, সুরমা, কুশিয়ারা, সারি-গোয়াইন ও ধলাই নদীর পানি ক্রমশ বাড়ছে। ভারতের চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪১০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে, যা সিলেট অঞ্চলে ঢল নামার বড় কারণ।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ জানিয়েছেন, সব উপজেলার জন্য শুকনো খাবার, চালসহ জরুরি খাদ্যসামগ্রীর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে, তবে এখনও কোনো এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়নি।
এদিকে আকস্মিক জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সিলেট সিটি করপোরেশন কন্ট্রোল রুম স্থাপন করেছে বলে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের সচিব আশিক নূর।
পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকলে বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।