যশোরের অভয়নগরে সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে হিন্দু এইড ইউকে‘র ত্রাণ বিতরণ

মতিয়ার চৌধুরী-লন্ডন,

  • প্রকাশিত: ১৪ জুন ২০২৫, ৫:০৫ অপরাহ্ণ

হিন্দু এইড ইউকে বাংলাদেশের যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার ডহর মাশিয়াহাটি গ্রামের বাড়েদা পাড়ায় সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক সহিংসতার শিকার অসহায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মাঝে মানবিক ত্রাণ সহায়তা দিয়েছে। স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে উগ্রবাদীদের ধারাবাহিক নৃশংস হামলার পর এই উদ্যোগ নেয়া হয়। সহিংস হামলায় গ্রামের কয়েকটি বাড়ীঘরে অগ্নি সংযোগ লুটপাট চালানো হয়, সেই সাথে ধ্বংশ করা প্রার্থনার স্থান গুলোও। ১১জুন ২০২৫ অনুপম রায়ের তত্বাবধানে এই ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

জরুরি ত্রান সহায়তার অংশ হিসেবে বিশেষ ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ ২৩টি পরিবারের মধ্যে মোট ২৩০,০০০ বাংলাদেশি টাকা বিতরণ করা হয়, যা তাদের জন্য সাময়িক ক্ষতি কাঠিয়ে উঠতে সহায়ক হবে। এই তহবিলের একটি অংশ গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ মন্দিরের জন্য বরাদ্দ করা হয়। গ্রামের একমাত্র এই মন্দিরটি সম্প্রদায়ের আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক ভিত্তি, যা সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সমাজকর্মী বাবু অনুপম রায়ের তত্ত্বাবধানে এই ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তার নেতৃত্বে সাহায্য বিতরণ স্বচ্ছতা, ন্যায্যতা এবং সহানুভূতির সাথে পরিচালিত হয় । অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন গোপালগঞ্জ জেলার উনিশ শতকের আধ্যাত্মিক হরিচাঁদ ঠাকুরের বংশধর মতুয়া মহাসংঘের নেতা ও প্রতিষ্ঠাতা কাশিয়ানী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান বাবু সুব্রত ঠাকুর। ধর্মীয় ও সামাজিক এই আন্দোলন দক্ষিণ বাংলার নমঃশূদ্র এবং অন্যান্য প্রান্তিক হিন্দু সম্প্রদায়ের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। শ্রী ঠাকুরের উপস্থিতি সংহতি এবং ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতার এক গভীর প্রতীক হিসেবে কাজ করেছিল। এটি হরিচাঁদ ঠাকুরের উত্তরাধিকারকেও স্মরণ করিয়ে দেয়, যার শিক্ষা লক্ষ লক্ষ মানুষের মধ্যে স্থিতিস্থাপকতা এবং সাম্যকে অনুপ্রাণিত করে।

এখানে উল্লেখ্য যে , ২০২১ সালের ২৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশ সফরকালে গোপালগঞ্জের ওড়াকান্দিতে হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মস্থান পরিদর্শন করেন, সেখানে তিনি পূজা করেন এবং এই অঞ্চলের আধ্যাত্মিক ও সামাজিক জীবনে মতুয়া সম্প্রদায়ের স্থায়ী অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

হিন্দু এইড ইউকে-এর মুখপাত্র বলেন ত্রান সামগ্রী নিয়ে পৌঁছালে স্থানীয় বাসিন্দারা অতিথিদের আগমনে গভীর কৃতজ্ঞতা জানান । মতুয়া সম্প্রদায়ের সদস্যরা ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র দুংখা এবং কাশোর বাজিয়ে এবং “হরি বোল” – একটি ভক্তিমূলক মন্ত্র – যা সম্মিলিত শক্তি, আধ্যাত্মিক সংকল্প এবং আশার প্রতীক – আনন্দের সাথে উচ্চারণ করে এই অনুষ্ঠান উদযাপন করেন।

“এই উদ্যোগটি শুধু বস্তুগত সাহায্য প্রদানই নয় যার মর্মার্থ – এটি ছিল মর্যাদা পুনরুদ্ধার, সংহতি পুনর্ব্যক্ত করা এবং আশার আলো। এই আয়োজনটি হিন্দু এইড ইউকে-এর পথপ্রদর্শক নীতিকে মূর্ত করে তুলা। “মানবজাতির সেবা করা স্রষ্টার সেবা করা।” হিন্দু এইড ইউকে সব সময়ই দক্ষিণ এশিয়া এবং এর বাইরেও দুর্বল সম্প্রদায়গুলিকে সহায়তা করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

Developed by: Web Design & IT Company in Bangladesh