সব
সিলেট ব্যুরো অফিস,

হবিগঞ্জ জেলায় নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কমিটি নিয়ে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় রাজনীতিতে এনসিপির আত্মপ্রকাশকে ঘিরে যখন আগ্রহ ও আলোচনা তুঙ্গে তখনই নবঘোষিত কমিটিতে বিতর্কিত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের অভিযোগ, নবগঠিত জেলা কমিটিতে স্থান পেয়েছেন একাধিক মাদক কারবারি, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির বর্তমান বা সাবেক নেতাকর্মীরা।
বিশেষ করে গণঅধিকার পরিষদ থেকে বহিষ্কৃত নেতা মাহবুবুল বারী চৌধুরী মুবিনকে করা হয়েছে যুগ্ম সমন্বয়কারী। এছাড়াও কমিটিতে সদস্য হয়েছেন লাখাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কামাল আহমেদ। তিনি ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে উপজেলার করাব ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী ছিলেন। চুনারুঘাট সদর ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুর রহমান চৌধুরী নোমান, একই উপজেলার ৩ নম্বর দেওরগাছ ইউপি যুবলীগ নেতা এবং ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজুলল করিমকেও সদস্য করা হয়েছে। আরেক সদস্য জেলা যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি নাসির উদ্দিন। তিনি হবিগঞ্জের একটি মদের পাট্টার মালিক এবং ‘পাট্টা নাসির’ নামে পরিচিত। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেছেন এক জামায়াত নেতা। আ খ ম উস্তার মিয়া বাহুবল উপজেলা জাপার সেক্রেটারি এবং সাবেক এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু জাহিরের ঘনিষ্ঠ লোক হিসেবে পরিচিত।
আওয়ামী নেতায় ভরপুর এমন কমিটি কিভাবে যাচাই-বাছাই ছাড়া উত্তরা অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরে অনুমোদিত হয় এমন প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এই কমিটি করার পেছনে অর্থনৈতিক লেনদেন আছে কি না সেই প্রশ্নও দেখা দিয়েছে।
হবিগঞ্জ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক পলাশ মাহমুদ বলেন, হবিগঞ্জে এনসিপির যে কমিটি দেওয়া হয়েছে এটি জুলাই চেতনার পরিপন্থী। তিনি মনে করেন এই কমিটিরি পেছনে আর্থিক লেনদেন হয়েছে।
কমিটির সদস্য হারুন আল রশিদের অভিযোগ, তাকে না জানিয়েছে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তিনি বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। এনসিপিতে তার নাম দেওয়ায় তিনি প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন।
হবিগঞ্জ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক চৌধুরী সামির সাকিব বলেন, প্রকৃতদের বাদ দিয়ে ফ্যাসিস্ট দোসরদের পুনর্বাসন করা হয়েছে হবিগঞ্জ এনসিপির কমিটিতে।
এ ব্যাপারে কথা বলতে রোববার দুপুর দেড়টার দিকে সারজিস আলমের সেলফোনে একাধিকার কল দিলেও সিসিভ করেননি তিনি।
নবগঠিত জেলা এনসিপির মূখ্য সমন্বয়ক নাহিদ উদ্দীন তারেক বলেন, কমিটিতে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলা হচ্ছে তারা কোনো একসময় হয়তো বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে ছিলেন। তবে দীর্ঘদিন ধরে কোনো দলে না থাকায় জুলাই চেতনা ধারণ করে এনসিপিতে যোগ দিয়েছেন। এখানে কাউকে জোড় করে কমিটিতে আনা হয়নি।
সূত্র : আমার দেশ