সব
মারুফ হাসান, সিলেট ব্যুরো,

আগামী ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে—এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত পিছিয়ে যাবে। দেশ পিছিয়ে গেলে বিনিয়োগ আসবে না, নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে, নারীরা নিরাপত্তা হারাবে, বিচার ব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে। তাই এখন দরকার একটি জনগণের নির্বাচিত সরকার।”
সোমবার (৭ জুলাই) সিলেট নগরের পাঠানটুলায় সানরাইজ কমিউনিটি সেন্টারে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিকের আমন্ত্রণে আয়োজিত খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু কামনায় দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, “নেতাকর্মীরা যেন এখন থেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়। মানুষের কাছে গিয়ে বোঝাতে হবে, বিএনপি ছাড়া মুক্তির কোনো পথ নেই।” তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকার ১৫ বছরে দেশে গণতন্ত্র ও মৌলিক অধিকারকে দমন করেছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে যে আশার আলো দেখিয়েছিলেন, তা আমাদেরই বাস্তবায়ন করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এখন আমাদের সংগ্রামের নেতা হচ্ছেন তারেক রহমান। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ অবস্থায় থেকেও আমাদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা, কর্মসংস্থান, নারীর নিরাপত্তা ও চিকিৎসাসেবাসহ একটি কল্যাণমুখী রাষ্ট্র গড়তে চাই। সেই লক্ষ্যে ৩১ দফা কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে।”
আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এমনি এমনি হাসিনা পালায়নি, এটা জনগণের রক্ত, ত্যাগ ও সংগ্রামের ফল। এখন আমাদের দায়িত্ব শহীদদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো, যাতে তারা কখনো অসহায় বোধ না করে। ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে আমাদের এই নতুন লড়াই সফল হবে ইনশাআল্লাহ।”
তিনি বলেন, “আমরা যখনই সুযোগ পাই, সিলেটে আসি। কারণ এখানেই ইসলামের আলো ছড়িয়েছেন হজরত শাহজালাল (রহ.) ও শাহপরান (রহ.)। এই পূণ্যভূমি আমাদের আত্মিক শান্তি দেয়। তারেক রহমানের শ্বশুরবাড়ি সিলেটে হওয়ায় এর প্রতি আমাদের বিশেষ টান রয়েছে।”
এর আগে সকালে সিলেটে পৌঁছে মির্জা ফখরুল হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করেন এবং পরে হজরত শাহপরান (রহ.)-এর মাজারেও যান।
এছাড়াও, দুপুরে তিনি ‘জুলাই-আন্দোলনে’ শহীদ পরিবারদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সেখানে তিনি বলেন, “ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ২০ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে এবং ১,৭০০ মানুষ গুম হয়েছে। শহীদ পরিবারদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব এখন আমাদের কাঁধে।”
দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ইকবাল মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, আরিফুল হক চৌধুরী, জি কে গউছ, ব্যারিস্টার এম এ সালাম, নিপুণ রায় চৌধুরী, মিফতা সিদ্দিকী, আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, রেজাউল হাসান কয়েস লোদী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি কুরআন তেলাওয়াত ও দোয়ার মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।