দেশে দারিদ্র্য বেড়েছে ১০ শতাংশের মতো

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ২৬ আগস্ট ২০২৫, ৯:১৫ পূর্বাহ্ণ


তিন বছরের ব্যবধানে দেশে দারিদ্র্য বেড়েছে ১০ শতাংশের মতো। দেশে এখন দারিদ্র্যের হার ২৭ দশমিক ৯৩ বা প্রায় ২৮ শতাংশ। ২০২২ সালে এই হার ছিল ১৮ দশমিক ৭। এর বাইরে ১৮ শতাংশ পরিবার দারিদ্র্যসীমায় নেমে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। যে কোনো সময় দারিদ্র্যসীমায় নেমে যেতে পারে তারা। গতকাল সোমবার বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি)-এর এক গবেষণায় দারিদ্র্য বৃদ্ধির এই চিত্র ওঠে এসেছে।

‘ইকোনমিক ডায়নামিকস অ্যান্ড মুড অ্যাট হাউজহোল্ড লেবেল ইন মিড ২০২৫’ শিরোনামের এই গবেষণা ফলাফল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এলজিইডি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রকাশ করা হয়। সংস্থার নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান গবেষণার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। গত ৮ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত সময়ে সারা দেশের ৮ হাজার ৬৭টি পরিবারের ৩৩ হাজার ২০৭ জন ব্যক্তির মতামতের ভিত্তিতে গবেষণাটি করা হয়।

পিপিআরসি বলেছে, দেশের এখন তিন ধরনের সংকটের প্রভাব চলমান আছে। এগুলো হলো কোভিড (২০২০-২০২২), মূল্যস্ফীতি ও রাজনৈতিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের আগস্টের পর ঘুষ কমেছে। গত বছরের আগস্ট মাসের আগে ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ সেবা নিতে ঘুষ দিয়েছেন। আগস্ট মাসের পর এই হার ৩ দশমিক ৬৯ এ নেমে এসেছে। এখনো সবচেয়ে বেশি ঘুষ দেওয়া হয়েছে সরকারি অফিসে। এর পরে পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতাদের বেশি ঘুষ দিয়েছে মানুষ।বাংলাদেশে চরম দারিদ্রসীমায় ৪ কোটি ১৭ লাখ মানুষ: ই…ছবি: সংগৃহীত

পরিবারের আয়ের ৫৫ শতাংশ চলে যায় খাদ্য পণ্য কেনার পেছনে। অনুষ্ঠানে ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, “জবাবদিহিতামূলক রাষ্ট্র গড়তে মানুষের জীবন যাত্রার অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দিতে হবে। সে বিবেচনা থেকেই নীতি পদক্ষেপ নিতে হবে সরকারকে।” তিনি আরও বলেন, “শুধু জিডিপির ওপর আলোচনাটা সীমাবদ্ধ না রেখে সমতা, ন্যায়বিচার, বৈষম্যহীনতা ও নাগরিকের কল্যাণ নিয়ে আলোচনা বাড়াতে হবে।”

প্রতিবেদনে পাঁচটি বড় ঝুঁকি বিশেষভাবে চিহ্নিত হয়েছে। এগুলো হলো— দীর্ঘস্থায়ী রোগের ক্রমবর্ধমান বোঝা, নারীপ্রধান পরিবারের দ্বৈত বঞ্চনা, ঋণের চাপ, খাদ্য অনিরাপত্তা ও মৌলিক সেবার স্থবিরতা। গবেষণায় দেখা গেছে, তিন বছরের ব্যবধানে শহরের পরিবারের মাসিক আয় কমেছে, কিন্তু খরচ বেড়ে গেছে। শহরের একটি পরিবারের গড়ে মাসিক আয় ৪০ হাজার ৫৭৮ টাকা, খরচ হয় ৪৪ হাজার ৯৬১ টাকা। ২০২২ সালে শহরের একটি পরিবারের মাসিক গড় আয় ছিল ৪৫ হাজার ৫৭৮ টাকা। অন্যদিকে গ্রামের পরিবারের গড় আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ২০৫ টাকা, খরচ ২৭ হাজার ১৬২ টাকা।

সার্বিকভাবে জাতীয়ভাবে একটি পরিবারের মাসে গড় আয় ৩২ হাজার ৬৮৫ টাকা, খরচ হয় ৩২ হাজার ৬১৫ টাকা। সঞ্চয় নেই বললেই চলে। একটি পরিবার খাবার কিনতে মাসে গড়ে ১০ হাজার ৬১৪ টাকা খরচ করে। এছাড়া প্রতি মাসে শিক্ষায় ১ হাজার ৮২২ টাকা, চিকিৎসায় ১ হাজার ৫৫৬ টাকা, যাতায়াতে ১ হাজার ৪৭৮ টাকা ও আবাসনে ১ হাজার ৮৯ টাকা খরচ হয়।

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

Developed by: Web Design & IT Company in Bangladesh