গাজায় দুর্ভিক্ষে আরও ১০ জনের মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক,

  • প্রকাশিত: ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১:০৮ অপরাহ্ণ

গাজায় দুর্ভিক্ষ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। ইসরায়েলের অবরোধ ও হামলায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় আরও ১০ জন ক্ষুধায় মারা গেছেন। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১৩ জনে, যাদের মধ্যে ১১৯ শিশু।

বুধবার (২৭ আগস্ট) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে কর্মকর্তারা জানান, গাজার খাদ্য সংকট ‘মানবসৃষ্ট ও পরিকল্পিত বিপর্যয়’। জাতিসংঘের উপ-মানবিক প্রধান জয়েস মুসুয়া সতর্ক করে বলেন, উত্তর-মধ্য গাজায় ইতিমধ্যেই দুর্ভিক্ষ নিশ্চিত হয়েছে এবং সেপ্টেম্বরের মধ্যে এটি দক্ষিণের দেইর এল-বালাহ ও খান ইউনিস পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। বর্তমানে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ অনাহার ও মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে, যা সেপ্টেম্বর শেষে ৬ লাখ ৪০ হাজার ছাড়াতে পারে।

জাতিসংঘের তথ্যমতে, পাঁচ বছরের নিচে অন্তত ১ লাখ ৩২ হাজার শিশু তীব্র পুষ্টিহীনতায় ভুগছে এবং তাদের মধ্যে ৪৩ হাজারের বেশি শিশুর জীবন সংকটে পড়তে পারে। মুসুয়ার ভাষায়, “এটি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, বরং যুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞ ও বাস্তুচ্যুতির কারণে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ।”

এদিকে ইসরায়েল ‘আইপিসি’র (Integrated Food Security Phase Classification) গাজা–সংক্রান্ত সাম্প্রতিক প্রতিবেদন প্রত্যাহারের আহ্বান জানালেও যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া ইউএনএসসি-র সব ১৪ সদস্য সংস্থাটির কাজের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “গাজার দুর্ভিক্ষ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।” পাশাপাশি তাৎক্ষণিক ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতিরও দাবি জানানো হয়।

মানবিক সংগঠন সেভ দ্য চিলড্রেন-এর প্রধান ইঙ্গার আশিং নিরাপত্তা পরিষদে বলেন, “গাজায় পরিকল্পিতভাবে শিশুদের অনাহারে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। ক্ষুধাকে সরাসরি যুদ্ধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।” তিনি জানান, গাজার হাসপাতালগুলোতে এখন হাড়জিরজিরে শিশুদের নীরবতা বিরাজ করছে—“তাদের আর কান্নার শক্তিও নেই।”

আশিং আরও বলেন, শিশুদের আঁকায় এখন শান্তি বা স্কুলের স্বপ্ন নয়, বরং খাবারের আকুতি ও মৃত্যুর ইচ্ছা ফুটে উঠছে। এক শিশুর আঁকায় লেখা ছিল: “আমি চাই জান্নাতে যেতে, যেখানে আমার মা আছেন। সেখানে ভালোবাসা আছে, খাবার আছে, পানি আছে।”

ওয়াশিংটনে বৈঠক এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার ওয়াশিংটনে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ও সাবেক মধ্যপ্রাচ্য দূত জ্যারেড কুশনারসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা পরিকল্পনা নিয়ে বৈঠক করেছেন।

ট্রাম্প সম্প্রতি বলেছেন, দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে গাজার যুদ্ধের ‘সুনির্দিষ্ট সমাপ্তি’ আশা করছেন, যদিও যুদ্ধবিরতির আলোচনায় তেমন কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। বৈঠকের বিস্তারিত তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

Developed by: Web Design & IT Company in Bangladesh