সব
মো: জাহেদী ক্যারল,
অবশেষে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নতুন হোয়াইটচ্যাপেল টাউন হল মহাসমারোহে উদ্বোধন করলেন নির্বাহী মেয়র লুতফুর রহমান। ২৫০ বছরের পুরনো রয়েল লন্ডন হাসপাতাল ভবনে প্রতিষ্ঠিত এ টাউন হলকে ঘিরে আয়োজিত হলো দিনব্যাপী “টাউন হল ওপেন ডে” এবং স্মারক ফলক উন্মোচনী অনুষ্ঠান।
জনতার ঢল ও উৎসবের আমেজ
সকাল ১০টা থেকেই নারী-পুরুষ ও শিশুদের উপচে পড়া ভিড়ে মুখরিত হয়ে ওঠে টাউন হল প্রাঙ্গণ। হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে নানা আয়োজন। দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে কাউন্সিল চেম্বারে মেয়র লুতফুর রহমান ও কাউন্সিলের চিফ এক্সিকিউটিভ স্বাগত বক্তব্য রাখেন। আর বিকেল ২টায় নামফলক উন্মোচন করেন নির্বাহী মেয়র, যা ভবনের ঐতিহাসিক রূপান্তরকে চিরস্মরণীয় করে রাখবে।
কেক কর্তন ও প্রদর্শনী
দুপুর ১টায় বিশাল কেক কর্তনের মাধ্যমে উৎসবের সূচনা হয়। দিনভর টাউন হলে চলে বিশেষ ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী, যেখানে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের গত ৬০ বছরের পরিবর্তন ও বৈচিত্র্য ফুটিয়ে তোলা হয়।
সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও পারিবারিক আনন্দ
স্থপতি ও কাউন্সিল কর্মীদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত গাইডেড ট্যুরে দর্শনার্থীরা ঘুরে দেখেন ভবনের ঐতিহাসিক অংশ। পাশাপাশি উপভোগ করেন সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা— সেল্টিক নৃত্য, স্টিল ব্যান্ড, ক্লেজমার সংগীত এবং বাংলা, সোমালি ও চীনা সংস্কৃতির পরিবেশনা। পূর্ব লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী পার্লি কিং ও কুইনও উপস্থিত থেকে দর্শকদের শোনান পুরনো দিনের গল্প।
শিশুদের জন্য ছিল ফেস পেইন্টিং ও বেলুন মডেলিং, আর বড়দের জন্য ফিটনেস টেস্টার সেশন। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি গ্রুপের অংশগ্রহণে জমে ওঠে কমিউনিটি মার্কেটপ্লেস। এছাড়া ব্রিক লেন কারি ফেস্টিভ্যাল-এর অংশ হিসেবে দর্শনার্থীরা পান বিশেষ ছাড়, যা রবিবার থেকে সারা সপ্তাহ চলবে।
ভবনের গৌরবময় ইতিহাস
১৭৫৭ সালে চালু হওয়া রয়েল লন্ডন হাসপাতাল ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনবাসীর জন্ম, চিকিৎসা ও মানবসেবার কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল। এ ভবনে কাজ করেছেন এনি ব্রুস্টার, এডিথ ক্যাভেল, এলিজাবেথ গ্যারেট এন্ডারসন ও টমাস বার্নার্ডোর মতো খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বরা। ২০১৫ সালে ভবনটি টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের অধীনে আসে এবং ২০২৩ সালে এটি নতুনভাবে টাউন হল হিসেবে যাত্রা শুরু করে।
মিলনমেলায় পরিণত টাউন হল
আজকের দিনটি সাংবাদিক, শিক্ষক, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়। সবাই মেয়র লুতফুর রহমানের নেতৃত্ব ও উদ্যোগের প্রশংসা করেন।