সব
আন্তর্জাতিক ডেস্ক,

রাশিয়ার তেল ও গ্যাস কেনার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, এক বছরের জন্য তা থেকে ছাড় পেয়েছে হাঙ্গেরি। হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের সঙ্গে বৈঠকের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এ ছাড় দিয়েছেন বলে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ট্রাম্প নিজেই এ ছাড়ের ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। হাঙ্গেরির জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী অরবানকে দীর্ঘদিন ধরেই ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মনে করা হয়। পুরো ইউক্রেইন যুদ্ধজুড়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও অরবানের ভালো সম্পর্ক রয়েছে।
হোয়াইট হাউস সফরকালে ট্রাম্প বলেন, তিনি বুদাপেস্টকে ছাড় দেওয়ার কথা বিবেচনা করছেন, কারণ “অন্য কোথাও থেকে তেল-গ্যাস পাওয়া তার (অরবান) জন্য বেশ কঠিন হবে।” গত মাসেই ওয়াশিংটন রাশিয়ার দুই সর্ববৃহৎ তেল কোম্পানিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে এবং যে দেশ বা সংস্থা এই কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে তেল কিনবে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছে।
অরবান-ট্রাম্প বৈঠকের পর হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেইতার সিজার্তো এক্সে (সাবেক টুইটার) লেখেন, “যুক্তরাষ্ট্র বুদাপেস্টকে তেল-গ্যাস নিষেধাজ্ঞা থেকে পুরোপুরি ও সীমাহীন ছাড় দিয়েছে।” পরে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানান, ছাড়ের মেয়াদ আপাতত এক বছর।
দুই নেতার সমঝোতার অংশ হিসেবে হাঙ্গেরি স্বল্প পরিমাণ মার্কিন প্রাকৃতিক গ্যাস কিনতেও রাজি হয়েছে। তবে এই সমঝোতাকে ইউরোপের অনেক দেশ ভালো চোখে দেখবে না, কারণ তারা দীর্ঘদিন ধরেই মস্কোর সঙ্গে বুদাপেস্টের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের বিরোধিতা করে আসছে।
ইউরোপের বেশিরভাগ দেশ হাঙ্গেরির মতো স্থলবেষ্টিত নয়, তারপরও তারা যে এখনো রাশিয়ার পণ্য কিনছে তা নিয়ে ‘বিব্রত থাকার’ কথা শুক্রবার স্বীকার করেছেন ট্রাম্প। অন্যদিকে অরবান বলেন, পাইপলাইনে গ্যাস নেওয়া “আদর্শিক বা রাজনৈতিকভাবে ঠিক না হলেও বন্দর না থাকায় এটাই হাঙ্গেরির জন্য রূঢ় বাস্তবতা।”
আগামী এপ্রিলে হাঙ্গেরিতে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। সেখানে জয়ের লক্ষ্যে অরবান এরই মধ্যে “সস্তা রুশ জ্বালানি” অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ভোটারদের। শুক্রবারের বৈঠকে ট্রাম্প ও অরবান ইউক্রেইন যুদ্ধ এবং রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে বৈঠক নিয়েও কথা বলেছেন।
“তিনি (অরবান) পুতিনকে বোঝেন, তাকে ভালোভাবে জানেনও। যুদ্ধ বন্ধ করতে যে বেশি সময় লাগবে না, ভিক্টর সেটা বুঝতে পারছেন বলেই মনে হয় আমার,” বলেছেন ট্রাম্প।
অন্যদিকে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তারা এবং যুক্তরাষ্ট্র—এই দুই দেশই কেবল সত্যিকারভাবে ইউক্রেইনে শান্তি চায়। “অন্য সব সরকার যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে, কারণ তাদের অনেকেই মনে করে ইউক্রেইন যুদ্ধক্ষেত্রে জিততে পারবে, যা বাস্তবতার বিপরীত,” মন্তব্য করেন তিনি।
ট্রাম্প সেসময় তাকে জিজ্ঞেস করেন, “তাহলে আপনি বলছেন ইউক্রেইন যুদ্ধে জিততে পারবে না?” জবাবে অরবান বলেন, “আপনি জানেন, অলৌকিক কিছু হতেও পারে।”