মরুভূমির উট বেনাপোল সীমান্তে

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ২৮ মে ২০২৫, ৩:০১ অপরাহ্ণ

উট বা উষ্ট্র কুঁজবিশিষ্ট একটি চতুষ্পদ প্রাণী। জীবজন্তুর মধ্যে উট ছিল আরববাসীদের কাছে অত্যন্ত মূল্যবান। এটি মরুজীবনের অত্যন্ত সহায় সম্বল। উট তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যে ও যাতায়াতের একমাত্র বাহন।

উট ছিল আরব দেশে আল্লাহর বিশেষ উপহার। উট ছিল যাযাবরদের কাছে ধাত্রীসম। যে কোন বিয়েতে উপহার, রক্তের দাম, জুয়ার মুনাফা, একজন বিত্তশালীর সম্পদ সবকিছুই উটের বিনিময়ে পরিমাপ করা হতো। উট থেকে দুধ, জ্বালানি, পোশাকের জন্য চামড়া, ওষুধের উপকরণ ইত্যাদি পাওয়া যেত। মরুভূমির মধ্যে কোন রাস্তা না থাকায় আরবে ছিল যান চলাচলের অনুপযোগী। তাই এই মরুময় দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য, যাতায়াতসহ সকল প্রকার যোগাযোগের জন্য একমাত্র উটের উপরই নির্ভর করতে হতো। তাই উট-ই ছিল আরববাসীর কাছে একমাত্র নির্ভরশীল বাহন।

বেদুইনদের কাছে উট ছিল মরুভূমির জাহাজ এর চেয়েও অধিক বেশি। আরবের উটগুলো শীতকালে প্রায় ২৫ দিন ও গরমকালে প্রায় ৫ দিন পানি ছাড়া চলতে পারে। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর (রাঃ) বলেছিলেন, যেখানে উটের উন্নতি হয়েছে কেবল সেখানেই আরব দেশের অগ্রগতি ঘটেছে। আরবদের অর্থনৈতিক জীবনে উটের যথেষ্ট প্রভাব ছিল।

সেই মরুভূমির জাহাজ উট এখন যশোরের সীমান্তবর্তী বেনাপোলের পুটখালি গ্রামে। বিষয়টি চমকে যাওয়ার মতো হলেও পুটখালিতে এই প্রথম গড়ে উঠেছে উটের খামার।

পবিত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে চমক লাগানো ব্যতিক্রমী এই খামারটি পুটখালি নাসিরের খাটাল নামে পরিচিত একটি খামারে। পুটখালী এবং এর আশপাশের এলাকাগুলোর মানুষের মধ্যে উট নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন প্রতিদিন সীমান্তবর্তী এ গ্রামে নাসিরের খামারে ছুটে আসছেন মরুর জাহাজ দেখার জন্য। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বয়স্ক মানুষ-অনেকেই উটগুলোর সঙ্গে ছবি তুলছেন, ভিডিও করছেন। সব মিলিয়ে একটা প্রাণবন্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, স্থানীয় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন প্রায় এক বছর আগে সৌদি আরব থেকে সাতটি উট আমদানি করে পুটখালীতে নিজের খামারে লালন-পালন শুরু করেন। যার মধ্যে একটি বিক্রিও হয়ে গেছে। এর প্রতিটির দাম হাঁকানো হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা করে। আগে থেকে তার বাণিজ্যিক গরুর খামারও রয়েছে। সেগুলো এখন কোরবানির জন্য পুরো প্রস্তুুত। খবর পেয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রেতারা আসছেন।

খামারের শ্রমিকেরা জানান, ঈদুল আজহার জন্য উটগুলোকে বিশেষভাবে যত্ম করে সুস্থ রাখা হচ্ছে। প্রতিদিন উটগুলোকে গোসল করানো হয়। সোয়াবিনের খৈল, ভুট্রা, ঘাস আর ছোলা খাওয়ানো হয় নিয়মিত। বিশেষ তালিকা মেনেই উটগুলোকে প্রতিদিন খাবার খাওয়ানো হয় আর যত্ম নেওয়া হয়।

শার্শা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তপু কুমার সাহা বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে শার্শা উপজেলায় ১৪ হাজারের মত প্রাণী কোরবানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও এ পর্যন্ত ১৪ হাজার ২শ‘ ২৬টি প্রাণী কোরবানির জন্য প্রস্তুুত আছে। এর মধ্যে গরু, ছাগল ভেড়া, উট, দুম্বাসহ বিভিন্ন প্রাণী আছে। বিভিন্ন খামারিদেরকে আমরা গরু পুষ্টকরণ ও প্রাণী ভোটানিকরনের ব্যাপারে সহযোগিতা করেছি এবং উঠান বৈঠকের মাধ্যমে রাসানিক বেস্ট্ররেড মুক্তভাবে কিভাবে লালন পালন করবে পরামর্শ প্রশিক্ষন এবং সহযোগিতা দিয়েছি। কৃমিনাশক ট্যাবলেট বিতরন করা হয়েছে প্রাণী সম্পদ দপ্তর থেকে। পাশাপাশি বিভিন্ন ভিটামিন প্রযুক্তি তাদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

Developed by: Web Design & IT Company in Bangladesh