সব
স্বদেশ বিদেশ ডট কম

সীমান্তে সংঘর্ষের জেরে এলাকা ছেড়ে একটি মন্দির প্রাঙ্গণে আশ্রয় নিয়েছে নারী শিশুসহ নানা বয়সী মানুষ। শুক্রবার কম্বোডিয়ার ওদ্দার মিনচি প্রদেশে
থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ভেচায়াচাই সতর্ক করে বলেছেন, কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্তে সংঘর্ষ যুদ্ধের রূপ নিতে পারে। কারণ পরপর দ্বিতীয় দিনে দুই দেশ প্রাণঘাতী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
ব্যাংককে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, যদি পরিস্থিতি আরও উত্তেজিত হয়, তাহলে এটি যুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে। যদিও আপাতত এটি সীমিত সংঘর্ষের পর্যায়েই আছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি ও কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের মতো থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া একে অপরের সীমান্তে ভারি কামান ও রকেট হামলা চালিয়েছে। থাই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুক্রবার পর্যন্ত সীমান্ত এলাকা থেকে ১ লাখ ৩৮ হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এসব এলাকার কয়েকটি হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে। সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ৪২৮ রোগীকে। দেশজুড়ে ৩০০টি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সংঘাতে ১৪ বেসামরিক নাগরিক ও এক সেনা নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া, আহত ৪৬ জনের মধ্যে ১৫ জন সেনা সদস্য।
এএফপিকে কম্বোডিয়ার এক সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, থাই সেনাদের হামলায় ৭০ বছর বয়সী এক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছে অন্তত পাঁচজন। বিবিসি জানিয়েছে, নমপেনের (কম্বোডিয়ার রাজধানী) পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, দেশটির ভূখণ্ডে থাই সেনারা নিষিদ্ধ ক্লাস্টার বোমা নিক্ষেপ করেছে। তবে এ নিয়ে থাই কর্তৃপক্ষ কোনো বক্তব্য দেয়নি।
বিস্তৃত এলাকাজুড়ে বিস্ফোরণ ঘটায় বিশ্বের অনেক দেশে ক্লাস্টার বোমা নিষিদ্ধ। এলোমেলোভাবে বিস্ফোরণের কারণে এতে হতাহতের পরিমাণ বেশি হয়।
এদিকে দেশ দুটির সীমান্ত বিরোধ নিয়ে আলোচনা করতে আজ শুক্রবার জরুরি বৈঠক করবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি)। সংস্থাটির সদর দপ্তর নিউ ইয়র্কে স্থানীয় সময় বিকেলে বৈঠক হওয়ার কথা। কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেতের আহ্বানের পর বৈঠকটি ডেকেছে নিরাপত্তা পরিষদ।
সংঘাতের জেরে কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্ত যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ ঘোষণা করেছে থাই সরকার। ফিরে আসতে বলা হয়েছে, কম্বোডিয়ায় বসবাসকারী থাই নাগরিকদের।
সীমান্ত নিয়ে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যকার বিরোধের ইতিহাস বেশ পুরোনো। ফরাসি শাসনামলে কম্বোডিয়ার সীমানা নির্ধারণের সময় থেকে এই বিরোধের শুরু। ২০০৮ সালে বিরোধপূর্ণ অঞ্চলের একটি মন্দিরকে কম্বোডিয়া ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে নিবন্ধনের চেষ্টা করলে থাইল্যান্ড প্রতিবাদ জানায়। তখনই সীমান্ত নিয়ে দুই দেশের বিরোধ প্রকাশ্যে আসে। যেটির জেরে বিভিন্ন সময় দুই দেশের সীমান্ত এলাকায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের সেনা ও বেসামরিক লোকজন প্রাণ হারিয়েছেন।