ঢাবির ১৮ হলে ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে বিতর্ক-বিক্ষোভ

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ৯ আগস্ট ২০২৫, ২:৫৭ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হলগুলোতে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা নিয়ে নানা সমালোচনা ও বিতর্ক দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, এসব কমিটিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের বহু নেতা–কর্মী পদ পেয়েছেন। শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি আহ্বায়ক কমিটিতে মোট ৫৯৩ জন শিক্ষার্থীকে স্থান দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা অভিযোগ করেছেন, ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পছন্দের কর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে। এ অভিযোগে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, প্রায় ৬০ জন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা–কর্মী নতুন কমিটিতে পদ পেয়েছেন। এর মধ্যে শামসুন নাহার হলের সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী নিতু রানী সাহা একই হলে ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হয়েছেন। জীববিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুল হাসান ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হয়েছেন। একইভাবে আরও কয়েকজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বিভিন্ন হলে পদ পেয়েছেন।

ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে শুক্রবার রাতে ছয়জনকে অব্যাহতি দিয়েছে ছাত্রদল। সংগঠনটির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তাঁদের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

অনেক পদবঞ্চিত নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। শেখ মুজিব হলের এক পদবঞ্চিত কর্মী বলেন, ‘২০২১ সাল থেকে ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী হয়েও আমি বাদ পড়েছি, অথচ ২০২২ সালে আসা জুনিয়ররা পদ পেয়েছে।’ স্যার এ এফ রহমান হলের আরেক পদবঞ্চিত নেতা অভিযোগ করেছেন, স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে তাঁর জায়গায় সভাপতির আত্মীয়কে বসানো হয়েছে।

গত বছরের ১৭ জুলাই হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণার পরও কমিটি দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। শুক্রবার বিকেলে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এবং মধ্যরাতে রোকেয়া হলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি জানিয়ে হল প্রাধ্যক্ষকে স্মারকলিপি দিয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, ‘এটি জুলাই অভ্যুত্থানের সাথে বেইমানি। রাতের মধ্যে কমিটি স্থগিত না হলে শিক্ষার্থীরা কঠোর পদক্ষেপ নেবে।’

গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক আবদুল কাদের বলেন, ‘ছাত্রশিবির প্রথমে গুপ্তভাবে হলে রাজনীতি শুরু করে, পরে ছাত্র ইউনিয়ন কমিটি দেয়। আজ ছাত্রদল কমিটি ঘোষণা করে পুরনো সংস্কৃতিতে ফিরিয়ে নিল।’

এ ছাড়া ইসলামী ছাত্রশিবিরের গোপন কমিটি থাকার অভিযোগও উঠেছে। গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের নেতা মহির আলম বলেন, ‘শিবিরের গোপন টিম হলে আগে থেকেই আছে, তাদের মতোই ছাত্রদলও কমিটি দিয়েছে।’

সূর্যসেন হলের নতুন কমিটির সদস্যসচিব আবিদুর রহমান বলেন, ‘রাজনৈতিক স্বচ্ছতা অপরিহার্য। গোপন কার্যক্রম গণতান্ত্রিক চর্চার পরিপন্থী এবং দেশ বিনির্মাণে প্রতিবন্ধক।’

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

Developed by: Web Design & IT Company in Bangladesh