জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল–জাসদের ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন : ইস্ট লন্ডনে আলোচনা সভা ও নৈশভোজ

মোহাম্মদ শাহজাহান,

  • প্রকাশিত: ৪ নভেম্বর ২০২৫, ৯:৩৯ অপরাহ্ণ

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল–জাসদের ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ইস্ট লন্ডনের ক্যাফে গ্রীল রেস্টুরেন্টের হলরুমে সর্ব ইউরোপীয়ান জাসদ ও যুক্তরাজ্য জাসদের যৌথ উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সর্ব ইউরোপীয়ান জাসদের সভাপতি মতিউর রহমান মতিন, এবং সঞ্চালনা করেন যুক্তরাজ্য জাসদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহান। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ জাসদের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অদ্যাবধি শহীদ ও প্রয়াত নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন জাসদ নেতা জাকারিয়া রশীদ। পরে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর, এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন যুক্তরাজ্য ‘হৃদয়ে ৭১’-এর আহ্বায়ক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ঢাকসুর সাবেক সদস্য দেওয়ান গৌছ সুলতান।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্য জাসদের কার্যকরী সভাপতি অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক মনি, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাহার পাশা, জাতীয় চার নেতা পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহ ফারুক আহমদ, সাবেক ছাত্র নেতা ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মঞ্জুরুল আলম পলাশ, প্রগ্রেসিভ ফোরামের আহ্বায়ক ডা. মুখলেছুর রহমান মুকুল, যুক্তরাজ্য উদিচীর সভাপতি শেখ নুরুল ইসলাম, নারী নেত্রী হেলেন ইসলাম, সাবেক ছাত্র নেতা সৈয়দ তৌহিদ ফিতরাদ হোসেন, অভিনেতা স্বাধীন খসরু, সাংবাদিক মতিহার চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা মোজ্জাফর হোসেন বাবুল, কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব আনচার আহমদ, নারী নেত্রী মিসেস মিসবাহ আহমদ , লিপি ফেরদৌসী ও জাসদ নেতা হুমায়ুন কবীর খান প্রমুখ।
সভায় স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন জাসদ নেত্রী ও কবি সালমা বেগম।

যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মারুফ চৌধুরী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে জাসদের ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা জানান।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ফয়জুর রহমান খান, আলাউদ্দিন আহমদ, জাসদ নেতা মসিউর রহমান সুহেল, এ. কে. চুন্নু, ওয়ালিয়র রহমান, সাইফুল ইসলাম মিঠু, নওশাদ নূর, মোহাম্মদ ও রাহুল চৌধুরী প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর বলেন—
“পশ্চিম পাকিস্তানীরা বাঙালিদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর গণহত্যা চালায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন—সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসেবে তিনিই এই ঘোষণার একমাত্র অধিকারী ছিলেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্রই একটি স্বাধীন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের জন্মসনদ।”

তিনি আরও বলেন,
“ইউনুস সরকার অসাংবিধানিকভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইন পরিবর্তন করে হাসানুল হক ইনুসহ রাজনৈতিক নেতাদের মিথ্যা বিচারের মুখোমুখি করছে—এটি বিচার নয়, প্রহসন।”

বিশেষ অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান গৌছ সুলতান বলেন—
“মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের চিহ্ন মুছে ফেলার জন্য ইউনুস নেতৃত্বাধীন সরকার মরিয়া হয়ে উঠেছে। এই সরকারকে প্রতিহত করতে বৃহত্তর ঐক্যের প্রয়োজন। ঐক্যের জন্য জাসদের প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়।”

সভাপতির বক্তব্যে মতিউর রহমান মতিন বলেন—
“আমরা সংখ্যায় কম হলেও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। জাসদ প্রত্যেক আন্দোলনে তার প্রমাণ রেখেছে। ইউনুস নেতৃত্বাধীন সরকার উৎখাত করে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সব দলের অংশগ্রহণে জাতীয় নির্বাচনই গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের অর্জন পুনরুদ্ধারের একমাত্র পথ।”

সভায় ‘Change.org’ প্ল্যাটফর্মে ইউরোপীয় ইউনিয়নের উদ্দেশে পিটিশন শেয়ার ও স্বাক্ষরের আহ্বান জানানো হয়, যাতে বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসানুল হক ইনুসহ সকল রাজবন্দীর মুক্তির দাবিতে আন্তর্জাতিক ক্যাম্পেইন জোরদার করা যায়।
বক্তারা বলেন, আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের চেতনা ধারণ করে দেশ পুনরুদ্ধার ও মুক্তিযুদ্ধের অর্জন রক্ষায় জাসদের ঐক্যের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
সভা শেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের নৈশভোজের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

Developed by: Web Design & IT Company in Bangladesh