সব
জেসমিন মনসুর,

বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষার মর্যাদায় পৌঁছে দিতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাওয়া সংগঠন অর্গানাইজেশন ফর দ্যা রিকগনেশন অফ বাংলা অ্যাজ এন অফিসিয়াল ল্যাংগুয়েজ অফ দ্যা ইউনাইটেড নেশনস–এর কনফারেন্স ও স্মারক গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত ৯ নভেম্বর রোববার দুপুরে বার্মিংহামের মাল্টিপারপাস সেন্টারে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে আসা নেতৃবৃন্দ ও কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে আয়োজনটি সম্পন্ন হয়। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে ‘জাতিসংঘে বাংলা’ শীর্ষক সংগঠনের দ্বিতীয় স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি তফাজ্জল হোসেন চৌধুরী। সাধারণ সম্পাদক আলহাজ ফয়জুর রহমান চৌধুরী এমবিই সঞ্চালনা করেন। প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রিটিশ এমপি ব্যারিস্টার আইয়ুব খান। তিনি বলেন, বাংলা একটি সমৃদ্ধ ভাষা এবং বিশ্বের কোটি মানুষের মাতৃভাষা। জাতিসংঘে বাংলা দাপ্তরিক ভাষা প্রতিষ্ঠায় তিনি নিজের সামর্থ্যের মধ্যেই প্রচারণা অব্যাহত রাখবেন।
সভায় বক্তৃতা দেন সংগঠনের সহ-সভাপতি কে কে এম আবু তাহের চৌধুরী, আরজু মিয়া এমবিই, আব্দুল লতিফ জেপি, মোহাম্মদ মকিস মনসুর, শেখ মফিজুর রহমান, আবু তাহের এমবিই, মোস্তফা চৌধুরী যুবরাজ, কামরুল হাসান চুনু, আব্দুল কাদির আবুল, ফিরোজ খান, মাসুদ আহমদ, সাবেক কাউন্সিলর শাহীদ আলী, সাংবাদিক ফারুক যোশী, নাজমুল হোসেন চৌধুরী, ডা. আব্দুল খালিক, এ্যাডভোকেট মীর গোলাম মোস্তফা, আবু সোয়েব তানজাম, আজাদ আবুল কালাম, রফিকুল আলম, শেবুল চৌধুরী, মাফিজ খান, নাসির উদ্দীন হেলাল, আঙ্গুর মিয়া, রাসিয়া খাতুন ও মিসেস রশিদ।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা ওলিউর রহমান চৌধুরী দুবাগী।
সভায় বক্তারা বলেন, ২০০৬ সাল থেকে বিশ্বময় প্রচারণা, গবেষণা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে সংগঠনটি বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষার মর্যাদায় উন্নীত করতে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০২২ সালে বাংলা জাতিসংঘের অদাপ্তরিক ভাষার স্বীকৃতি পেলেও পূর্ণ দাপ্তরিক স্বীকৃতি না পাওয়া পর্যন্ত প্রচারণা অব্যাহত থাকবে বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়।
সভাপতি তফাজ্জল হোসেন চৌধুরী প্রয়াত সভাপতি তজাম্মেল টনি হক এমবিইসহ প্রথম দিকের নেতৃবৃন্দকে ‘একবিংশ শতাব্দীর ভাষাসৈনিক’ হিসেবে স্মরণ করেন। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিদেশে নতুন প্রজন্মের মধ্যে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির চর্চা বাড়াতে বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলা পাঠ্যবই অন্তর্ভুক্তি এবং কমিউনিটিভিত্তিক সাংস্কৃতিক উদ্যোগ বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়।
সভায় বক্তারা দুঃখ প্রকাশ করেন যে, ব্রিটেনে বাংলাদেশ হাই কমিশনের কোনো প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না।
সবশেষে মধ্যাহ্নভোজের মাধ্যমে কনফারেন্সের সমাপ্তি হয়। উপস্থিতরা আশা প্রকাশ করেন, খুব শিগগিরই বাংলাকে জাতিসংঘের সপ্তম দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি আদায় সম্ভব হবে।
