সব
স্বদেশ বিদেশ ডট কম

যাত্রীসেবা উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি এসেছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। সাম্প্রতিক সময়ে অবকাঠামো উন্নয়ন, নিরাপত্তা জোরদার এবং প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থাপনার ফলে দেশি ও বিদেশি যাত্রীদের ভোগান্তি কমেছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, চেক-ইন ও ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া আগের তুলনায় দ্রুততর হয়েছে। আধুনিক স্ক্যানিং যন্ত্র স্থাপন, কাউন্টার সংখ্যা বৃদ্ধি এবং জনবল পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে যাত্রী চলাচলে গতি এসেছে। একই সঙ্গে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় যুক্ত হয়েছে উন্নত নজরদারি ব্যবস্থা ও স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম।
ব্যাগেজ হ্যান্ডলিং ব্যবস্থাতেও ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা গেছে। লাগেজ ডেলিভারিতে সময় কমেছে এবং হারানো লাগেজ সংক্রান্ত অভিযোগও হ্রাস পেয়েছে। পাশাপাশি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, যাত্রীদের বসার সুবিধা বৃদ্ধি এবং টার্মিনালজুড়ে পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সৌদি আরবপ্রবাসী আবুল বাশার বলেন, “আগে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো, এখন অপেক্ষার সময় অনেক কমেছে। তথ্যসেবা ডেস্ক ও ডিজিটাল সাইনেজের উন্নতির কারণে প্রয়োজনীয় তথ্য সহজেই পাওয়া যাচ্ছে। লাগেজ হ্যান্ডলিংয়ে বডি-ওয়ার্ন ক্যামেরার ব্যবহার দেখে স্বস্তি পাচ্ছি। এতে প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে এবং লাগেজ কাটার ভয় অনেকটাই কমবে।”
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কে এম আবু নওশাদ বলেন, ‘তিনি ব্যক্তিগতভাবে দলগত উদ্যোগ ও প্রক্রিয়াগত সাফল্যে বিশ্বাসী। সবার সম্মিলিত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার মাধ্যমেই আরও উন্নত যাত্রীসেবা এবং ইতিবাচক কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব। তিনি যাত্রীদের যেকোনো সমস্যা, প্রস্তাব বা পরামর্শ বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কিংবা এয়ারপোর্ট ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জানানোর আহ্বান জানান এবং এ জন্য হটলাইন নম্বর ১৩৬০০-এ যোগাযোগ করার অনুরোধ করেন।’
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) বোসরা ইসলাম বলেন, যাত্রীসেবা ও লাগেজ হ্যান্ডলিংয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বডি-ওয়ার্ন ক্যামেরা ব্যবহারের কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে বিদেশফেরত যাত্রীরা লাগেজ কর্তনের দায় বিমান বা সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের ওপর চাপান, যদিও কিছু অসাধু চক্র জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এসব পরিস্থিতিতে যাত্রীদের সম্পত্তি সুরক্ষা, লাগেজ হ্যান্ডলিং পর্যবেক্ষণ এবং দায়ী ব্যক্তি বা স্টেশন চিহ্নিত করতে প্রতিটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের লাগেজ ওঠানামায় বডি-ওয়ার্ন ক্যামেরা ব্যবহারের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই প্রযুক্তির সম্প্রসারণ প্রতিটি ধাপে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে, যা যাত্রীদের আস্থা বাড়ানোর পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্মীদের পেশাদারিত্বও আরও দৃঢ় করবে।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগীব সামাদ বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স দীর্ঘদিন ধরে নিজস্ব ফ্লাইটে ব্যাগেজ হ্যান্ডলিংয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বডি-ওয়ার্ন ক্যামেরা ব্যবহার করে আসছে। সম্প্রতি গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং এজেন্ট হিসেবে বিমানবন্দর পরিচালিত সকল এয়ারলাইন্সের ব্যাগেজ হ্যান্ডলিং কার্যক্রমেও এ প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু হয়েছে।
তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে আলোচনা, পর্যালোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর রাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের অনুমোদনে এই সময়োপযোগী উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে ধাপে ধাপে আরও উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।