মিয়ানমারে বিস্ফোরণের শব্দে কক্সবাজার সীমান্তে আতঙ্ক

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:০২ পূর্বাহ্ণ

মিয়ানমার সীমান্তের ওপার থেকে আসা ভয়াবহ বিস্ফোরণের শব্দে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তে উদ্বেগ ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, শনিবার রাত প্রায় ১১টার দিকে টানা কয়েক দফায় বিস্ফোরণ শোনা যায়, যা দীর্ঘদিনে সর্বাধিক তীব্র বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) রাত প্রায় ১১টার দিকে উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত এলাকায় টানা ৩-৪ মিনিটের ব্যবধানে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। স্থানীয়দের দাবি, সাধারণত সংঘাতের সময় মাঝে মাঝে গুলির শব্দ শোনা যায়, কিন্তু এত তীব্র ও আকস্মিক বিস্ফোরণ সাম্প্রতিক সময়ে শোনা যায়নি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শব্দের তীব্রতায় অনেকেই ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। হোয়াইক্যং, পালংখালী, রাজাপালং, ঘুমধুমসহ অন্তত ১৫টি সীমান্তবর্তী গ্রামে শব্দ শোনা গেছে। পালংখালীর রহমতের বিল এলাকার বাসিন্দা বোরহান উদ্দিন বলেন, “হঠাৎ বজ্রপাতের মতো বিকট শব্দ হয়। প্রথমে বুঝতেই পারিনি কী ঘটছে।” কুতুপালংয়ের বাসিন্দা হৃদয় চৌধুরী জানান, “শব্দে মাটি কেঁপে ওঠার মতো অনুভূতি হয়েছে। মনে হয়েছিল ভূমিকম্প হয়েছে।”

রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও বিস্ফোরণ অনুভূত হয়। রোহিঙ্গা চিত্রগ্রাহক সাহাত জিয়া হিরো সামাজিক মাধ্যমে দাবি করেছেন, মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী উত্তর মংডু অঞ্চলে বিমান হামলা চালিয়েছে, যার শব্দ বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছেছে।

রাখাইনের সংবাদমাধ্যম মংডু ডেইলি নিউজ ও আরকান আপডেট জানিয়েছে, রাত ১১টা ২০ মিনিট পর্যন্ত জান্তা বাহিনীর এসএসএ যুদ্ধবিমান উত্তর মংডুর কিয়াও চাউং ডিভিশন ও গান চাউং ব্যাটালিয়নে অন্তত তিন দফা গোলাবর্ষণ করেছে। আকাশে ওয়াই-১২ বিমানও উড়তে দেখা গেছে।

এই অঞ্চলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে জান্তা সেনাবাহিনী ও আরকান আর্মির মধ্যে সংঘাত চলছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে বিদ্রোহী সংগঠন উত্তরের ২৭১ কিলোমিটার বিস্তৃত এলাকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার দাবি করেছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত সংঘাতের কারণে কমপক্ষে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশ সীমান্তে পালিয়ে এসেছে।

বিজিবি উখিয়া ব্যাটালিয়ন (৬৪ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জসীম উদ্দিন জানান, রাত ১০টা ৩৮ থেকে ১০টা ৫৫ মিনিটের মধ্যে শূন্যরেখা থেকে ১৩ কিলোমিটার ভেতরে মিয়ানমারের বলিবাজার এলাকায় বোমা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। মিয়ানমার বিমানবাহিনী তিন দফায় বোমা নিক্ষেপ করেছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় সীমান্ত টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, চলতি মাসের ১৩ ও ১৭ ডিসেম্বরও সীমান্ত এলাকায় অনুরূপ গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়, যা সীমান্তবাসীর উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে।

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

Developed by: Web Design & IT Company in Bangladesh