মাস্টার প্ল্যান করে টেকসই ও পরিকল্পিত উন্নয়ন করতে চাই — আনোয়ারুজ্জামান

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ৭ এপ্রিল ২০২৩, ৪:১৬ পূর্বাহ্ণ


সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশি, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সিলেট প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। বৃহস্পতিবার বেলা দুইটায় প্রেসক্লাবের আমিনূর রশীদ মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ক্লাব সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে সভায় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী আসন্ন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার দৃঢ় আশা ব্যক্ত করে নির্বাচনে সাংবাদিকদের পরামর্শ-দিকনির্দেশনা দিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানান এবং দলের মনোনয়ন পেলে এবং নির্বাচিত হলে সিলেট সিটিকে পরিকল্পিত ও টেকসই স্মার্ট, গ্রিন ও ক্লিন সিটি গড়ে তোলার ইচ্ছার কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে সিলেট নগরের মানুষের জন্য কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তার নির্দেশনা পেয়ে আমি যুক্তরাজ্যের জীবন ছেড়ে দেশের মানুষের সেবায় মাঠে নেমেছি।’
সিলেটে যেসব উন্নয়ন দৃশ্যমান সেগুলো অপরিকল্পিত উল্লেখ করে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী আরও বলেন, ‘বর্তমান মেয়র বিএনপির হলেও সিলেটের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দু’হাত খুলে বরাদ্দ দিয়েছেন। কিন্তু আজও পরিকল্পিত কোনো উন্নয়ন চোখে পড়েনি নগরবাসীর।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেটের উন্নয়নে অত্যন্ত আন্তরিক হলেও তাঁর দেওয়া বরাদ্দের টাকায় সিলেটের অপরিকল্পিত উন্নয়ন হচ্ছে বলে মনে করেন আনোয়ারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জন্য প্রধানমন্ত্রী সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা দিয়েছেন, ঢাকা-সিলেট চার লেনের প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে, সিলেট নগরের উন্নয়নে ১২শ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। সিলেট নগরে রাস্তা-ড্রেন নির্মাণ করে আবার সেগুলো ভাঙা হচ্ছে। অপরিকল্পিত উন্নয়নে টাকা খরচ হচ্ছে বেশি, জনগণও সুফল পাচ্ছে না।’
তিনি বর্ধিত এলাকাসহ পুরো সিটি করপোরেশনকে একটি পরিকল্পিত নগর হিসেবে গড়ার কথা জানান। এ জন্য দেশ ও বিদেশের বিশেষজ্ঞ টিম গঠন করে দীর্ঘমেয়াদী নগর পরিকল্পনা সাজানোর ইচ্ছা আছে তার।
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি আমাকে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকার মেয়র প্রার্থী করেন এবং জনগণের রায়ে আমি নির্বাচিত হই তবে প্রকৃত অর্থে একটি ক্লিন, গ্রিন ও স্মার্ট সিলেট মহানগর গড়তে প্রাণপণ চেষ্টা চালাবো। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সিলেট মহানগরের সমস্যাগুলো সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করে সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করবো। ইনশা-আল্লাহ। বিশেষ করে আপনারা সাংবাদিকদের পরামর্শকে গুরুত্ব দিয়ে আক্ষরিক অর্থে একটি স্মার্ট সিলেট নগর গড়তে চেষ্টা করবো।’
বিমানবন্দর থেকে সম্পূর্ণ নগরকে উন্নতমানের সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা এবং মেধাবি প্রজন্মের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে নানা পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
সিলেট এনআরবি হাব উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কিছু সংখ্যক ভূমিদস্যু প্রবাসীদের বাড়ি টার্গেট করে দখল-বাণিজ্য করছে। এদের কোনো দল নেই। এই চক্রে জামাত-বিএনপি এমনকি আমার দলেরও লোক থাকতে পারে। এই সমস্যা চিহ্নিত করে প্রবাসীদের সম্পদের নিরাপত্তা বিধানে উদ্যোগ নিতে হবে। তবে, প্রবাসীরা কোনো অপরাধে জড়িত থাকলে তাকে সহযোগিতা করা যাবে না।’
বক্তব্যের শুরুতে তিনি সিলেট প্রেসক্লাবের সঙ্গে শৈশব থেকে তার পরিচয় ও সাংবাদিকদের সঙ্গে হৃদ্যতার কথা জানিয়ে বলেন, এ নগর সবার, নগরের উন্নয়নে একজন জনপ্রতিনিধির যেমন দায়িত্ব রয়েছে তেমনি সাংবাদিকদের দায়-দায়িত্ব রয়েছে। প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে পরামর্শ ও দিকনিদের্শনা দিয়ে কাজ করার আহ্বান।
দল যাকে মনোনয়ন দেবে নিজের সর্বাত্মক দিয়ে তার পক্ষে সিটি নির্বাচনে কাজ করবেন বলেও জানান তিনি।
সিটি করপোরেশন ছাড়াও সিলেটকে নিয়ে তার ভাবনার কথা জানান আনোয়ারুজ্জামান। তিনি বলেন, সিলেটের মানুষ ঢাকায় যাতায়াতে নানা ভোগান্তির শিকার হন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। দ্রুতগতির ট্রেন চালু করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ মো. রেনুর পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় আনোয়ারুজ্জামান সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। সভায় ক্লাব সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...