চাহিদা না থাকায় পুত্র সন্তান বিক্রি!

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ১৫ অক্টোবর ২০২০, ৩:৪৪ অপরাহ্ণ

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় এক প্রসূতির সদ্য ভুমিষ্ট নবজাতককে বিক্রির ঘটনা ঘটেছে। পুত্র সন্তানের প্রতি স্বামীর চাহিদা না থাকায় ওই নবজাতককে বিক্রি করা হয় বলে জানা গেছে। তবে সন্তান বিক্রির বিষয়টি জানেন না বলে জানিয়েছেন স্বামী খাইরুল ইসলাম।

ব্র্যাকের স্থানীয় এক স্বাস্থ্য সেবিকার মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী গোয়ালবাড়িয়া গ্রামের এক দম্পতির কাছে নবজাতককে বিক্রি করা হয় বলে জানা গেছে।

বুধবার সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পুত্রসন্তান প্রসব করেন খাইরুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী আবাসনের বাসিন্দা মিনারা খাতুন।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার বারাদি ইউনিয়নের নতিডাঙ্গা আবাসনে বসবাস করেন খাইরুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী মিনারা খাতুন (৩২)। প্রথম স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে নতিডাঙ্গা গ্রামেই থাকেন খাইরুল ইসলাম। মঙ্গলবার ভোরে প্রসব বেদনা ওঠে গর্ভবতী মিনারা খাতুনের। স্বামীর সাথে মোবাইলফোনে কথা বলে আলমডাঙ্গা উপজেলা ব্র্যাক সংস্থার সেবিকা হেনা খাতুন ও আবাসনের বাসিন্দা বারেক আলীর স্ত্রী আমেলা খাতুনকে সাথে নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হন মিনারা খাতুন। সকাল ৮টার দিকে পুত্রসন্তান জন্ম দেন তিনি।

প্রসূতি মিনারা খাতুন বলেন, ৮ মাস আগে আমি সন্তানের মা হবো শুনেই আমার স্বামী চলে গেছে। এখানে (আবাসন) আর আসে না। মাঝে মধ্যে শুধু মোবাইলফোনে কথা হয়। কন্যাসন্তান জন্ম নিলেই আমার স্বামী মেনে নেবে। আমার ছেলে হওয়ার কারণে আমি সন্তানকে অন্যকে দিয়ে দিয়েছি।

তবে নবজাতকের পিতা খাইরুল ইসলাম বলেন, আমার দুই সংসারে প্রথম স্ত্রীর ৩ পুত্র সন্তান আছে। দ্বিতীয় স্ত্রীরও এক সন্তান আছে। আমি আর কোনো পুত্রসন্তান নিতে ইচ্ছুক নই। তবে, আমার সন্তানকে বিক্রি করা হয়েছে কিনা আমি জানি না।

আলমডাঙ্গা উপজেলা ব্র্যাক সংস্থার সেবিকা হেনা খাতুন বলেন, মোবাইল ফোনে আমাকে ডেকে নেয়ার কারণে তাদের সাথে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে গিয়েছি। পুত্রসন্তান হওয়ার পর মিনারা তার সন্তানকে অন্য কারো কাছে দিয়ে দিতে বলেন। পরে আমি আমাদের পাশ্বর্বতী গোয়ালবাড়িয়া গ্রামের মাঝেরপাড়ার মনোয়ার হোসেন স্ত্রী বুলবুলি খাতুনের কাছে দিয়ে দিই।

এ বিষয়ে আবাসন পরিচালনা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দার খা বলেন, বছর দুয়েক আগেও পুত্র সন্তান প্রসব করেন খাইরুল ইসলামের স্ত্রী মিনারা খাতুন। সেই সন্তান তারা মেরে ফেলে নদীর পাশে পুতে রাখে। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে সেখান থেকে মরদেহ তুলে গ্রামের কবরস্থানে নিয়ে একাই দাফন করেন খাইরুল ইসলাম।

স্থানীয়দের অনেকেই বলেছেন, মিনারা খাতুনের কার্যকলাপ খুবই খারাপ। ৩ বছর আগে তার প্রথম সন্তান ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে কুষ্টিয়া এলাকায় বিক্রয় করেন। গত ২ বছর আগে তার এক সন্তানকে মেরে ফেলে পুতে রাখে। সর্বশেষ বুধবার সকালে তার আরেক সন্তানকে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করেছে।

আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবীর জানান, থানায় এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করেননি এবং বিষয়টি আমার জানা নেই।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...