হেফাজত নয় প্রধানমন্ত্রীর কাঁধে ঘাপটিমারা নাস্তিকরাই তার শত্রু —- সিলেটে বাবুনগরী

সিলেট অফিস,

  • প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০২০, ৭:০৬ অপরাহ্ণ

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নব নির্বাচিত আমীর, শায়খুল হাদীস আল্লামা জুনায়দ বাবুনগরী বলেছেন, সমস্ত মসজিদের মুসল্লিরা হেফাজতের সদস্য, সকল মসজিদের ইমাম, মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকগণ হেফাজতের সদস্য। সকল স্কুল-কলেজের ধর্মপ্রাণ মানুষ হেফাজতের সদস্য। নামাজ, রোজা, হজ্জ-যাকাত হলো হেফাজতের কর্মসূচী। হেফাজত বাংলাদেশে নামাজ কায়েম করতে চায়।যারা ইসলামের শত্রু, রাসূলের দুশমন;নাস্তিক- মুর্তাদদের কবর রচনার জন্য হেফাজতে ইসলামের অভ্যুদয়। হেফাজত সরকার বিরোধী সংসগঠন নয়, আবার সরকার দলীয় সংগঠনও নয়। বিশ্বের ২ শত কোটি মুসলমানের ভালোবাসার প্রতীক রাসূল সা. এর বিরুদ্ধে ফ্রান্স সরকার ব্যঙ্গ করে, কটাক্ষ করে মুসলমানদের কলিজায় আগুন লাগিয়েছে। রাসূলের অপমানের মোকাবেলায় রক্ত সাগর ভাসিয়ে দেবে।

তিনি কাদিয়ানীদেরকে কাফের ঘোষণা করে বলেন,’ আমি মনে করি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও কাদিয়ানীদেরকে মুসলিম বলে মনে করেননা। শুধু ব্যাক্তিগতভাবে কাদিয়ানীদেরকে কাফের মনে করলে হবেনা। রাষ্ট্রীয়ভাবেও কাদিয়ানীদেরকে কাফের ঘোষণা করতে হবে। ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে কাদিয়ানীদেরকে কাফের ঘোষনায় কোন সমস্যা থাকার কথা নয়।’ তিনি বলেন,’আমরা হিন্দুদেরকে কাফের ঘোষণার দাবী জানাইনা, কারণ তারা কাদিয়ানীদের মতো মুসলিম পরিভাষা ব্যবহার করেনা,নিজেদেরকে মুসলিম দাবী করে না। কাদিয়ানীরা অন্যন্য সংখ্যালঘুদের ন্যায় নিজেদের ধর্ম পরিচয়ে এদেশে বাস করুক, আমাদের কোন আপত্তি নেই। এই কাদিয়ানীরাই বিশ্বনবীর বড় শত্রু।’

হেফাজতে আমির আরো বলেন, হেফাজতে ইসলামিকে সরকারের বন্ধু উল্লেখ করে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হেফাজতে ইসলামি আপনার শত্রু না। আমরা আপনার বন্ধু। কিন্তু আপনার কাঁধের উপর ঘাপটিমেরে বসে থাকা নাস্তিক মুর্তাদরাই আপনার শত্রু।’ তিনি বলেন,’ সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী এদেশ মদীনা সনদে চলবে। অন্য কোন সনদে চলবেনা। তাই মদীনা সনদের সাথে সাংঘর্ষিক কাজ শক্তভাবে দমন করতে হবে।’
ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয় মদদে মহানবী সা. এর ব্যঙ্গ চিত্র প্রদর্শনের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলাম সিলেটের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। আল্লামা বাবুনগরী বিকাল ৪.৩৯ মিনিটে তাঁর বক্তব্য শুরু করেন।

আজ বেলা ২ টায় ঐতিহাসিক রিজেস্ট্রারী মাঠে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন, হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা শায়খুল হাদীস আল্লামা জিয়া উদ্দীন। সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, হেফাজতের মহাসচিব আল্লামা নূর হুসাইন কাসিমী, নায়েবে আমীর প্রফেসর ড. আহমদ আবদুল কাদের, উপদেষ্টা শায়খুল হাদীস আল্লামা মুফতী রশিদুর রহমান ফারুক বর্ণভী, শায়খুল হাদীস আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক আকুনী, নায়েবে আমীর শায়খুল হাদীস আল্লামা নূরুল ইসলাম খান সুনামগঞ্জী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, কেন্দ্রীয় নেতা এডভোকেট মাওলানা আবদুর রকীব ও সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন। সমাবেশের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, সমাবেশের অন্যতম আহবায়ক প্রিন্সিপাল হাফিজ মাওলানা মজদুদ্দিন আহমদ। বক্তব্য রাখেন সমাবেশের অন্যতম আহবায়ক মাওলানা মুহিউল ইসলাম বুরহান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব শায়খুল হাদীস আল্লামা নূর হোসাইন কাসিমী বলেন,’ আল্লাহর রাসূল সা. এর শান মান রক্ষায় মুসলিম জাতি রক্ত দিতে প্রস্তুত। যতদিন আল্লাহর হাবীবের শানে বেআদবী করা হবে আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করে যাবো। আমরা সরকারের প্রতি উদাত্ত আহবান জানাই, সংসদে অবিলম্বে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনতে।’ হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর প্রফেসর ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন,’বিশ্বের কোন স্থানে নবীর অবমাননা সহ্য করা হবেনা। বাংলাদেশে নবীর দুশমনদের প্রতিহত করা হবে।’ হেফাজতের উপদেষ্টা শায়খুল হাদীস আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক বলেন,’মহানবী সা. এর প্রতি ভালোবাসা বিশ্ব মুসলমানের হৃদয়ে যেভাবে রয়েছে, যেভাবে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নবীর সুন্নাত সমূহ পালন করতে হবে।’

কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন,’ ফ্রান্স ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে ফ্রান্স দুতাবাস থাকবেনা। সভাপতির বক্তব্যে হেফাজতের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা শায়খুল হাদীস আল্লামা জিয়া উদ্দিন বলেন,’ আমরা রাসূল সা. এর ভালোবাসায় জমায়েত হয়েছি। নানা প্রতিক‚লতা সত্তে¡ও আজকের সমাবেশে লাখো মানুষের জমায়েত প্রমাণ করে রাসূলের সা. এর জন্য সিলেটবাসী যে কোন ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত।’

হেফাজতে ইসলাম সিলেটের অন্যতম নেতা হাফিজ মাওলানা তাজুল ইসলাম হাসান, প্রিন্সিপাল মাওলানা সামিউর রহমান মুসা ও মাওলানা বিলাল আহমদ ইমরানের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, শায়খুল হাদীস মুফতী মুজিবুর রহমান, শায়খুল হাদীস মাওলানা আউলিয়া হোসাইন,মাওলানা শায়খ আবদুল বাসির,মহানগর হেফাজত নেতা হাফিজ মাওলানা নূরুজ্জামান,মাওলানা খলিলুর রহমান, অধ্যাপক বজলুর রহমান, জেলা হেফাজত নেতা মাওলানা ইকবাল হোসাইন, মাওলানা আহমদ বেলাল, মাওলানা গাজী রহমতুল্লাহ, হাফিজ আবদুর রহমান সিদ্দিকী, মুফতী ফয়জুল হক জালালাবাদী, মাওলানা নাসির উদ্দিন, কারী মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা আতাউর রহমান কোম্পানিগঞ্জী, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, মাওলানা খলিলুর রহমান, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা আহমদ সগীর, মওলানা ইউসুফ খাদিমানী, মাওলানা মুখলিছুর রহমান, মাওলানা হাবীব আহমদ শিহাব, মাওলানা এমদাদুল্লাহ, মাওলানা সাইফুল্লাহ, মাওলানা কাজী আবদুল ওয়াদুদ, মাওলানা শাহ মমশাদ আহমদ, মাওলানা আবদুল মালিক কাসিমী, মাওলানা শামসুদ্দিন মুহাম্মদ ইলয়াস, মাওলানা মুজিবুর রহমান কাসিমী, হাফিজ মাওলানা ফখর্জুামান, মাওলানা এবাদুর রহমান, মাওলানা আবদুল গফফার, মাওলানা রফিকুল ইসলাম, মাওলানা এমরান আলম, মাওলানা ইকবাল আহমদ, মাওলানা আবদুস সামাদ, মাওলানা সুহাইল আহমদ, মাওলানা মুশাহিদ খালপারী, মাওলানা আলী আমদ, মাওলানা আতিকুর রহমান, মাওলানা মুশফিকুর রহমান মামুন, মাওলানা মাসুক আহমদ সালামী, মাওলানা জিল্লুর রহমান,মাওলানা শিব্বির আহমদ, মাওলানা জাহিদ উদ্দীন চৌধুরী, মাওলানা হাফিজ জামিল আহমদ আনসারী,মাওলানা এহতেশাম কাসিমী,মাওলানা মামুনুর রশীদ,মাওলানা তালিব উদ্দীন, মাওলানা আলী আহমদ, মাওলানা নজরুল ইসলাম, মাওলানা নূর আহমদ কাসিমী, মাওলানা ফাহাদ আমান, মাওলানা আবদুল্লাহ নেজামী, মাওলানা নিয়ামতুল্লাহ খাসদবিরী, মাওলানা অলিউর রহমান, মাওলানা হাফিজ আলী আহমদ, মাওলানা আমীন উদ্দীন, মাওলানা আবদুল মুছাব্বির, মাওলানা মাওলানা কয়েছ আহমদ, মাওলানা পীর আবদুল জব্বার,মাওলানা আফতাব উদ্দীন নোমানী,মাওলানা নাজিম উদ্দিন, মাওলানা কামরুল ইসলাম ছমীর, রোটারিয়ান মাওলানা মুহাম্মদ আলী, মাওলানা নাজমুল হোসাইন, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা কবীর আহমদ খান, আব্বাস উদ্দীন জালালী,মাওলানা ইমদাদুল হক, মাওলানা আলী আবিদীন, মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম, হাফিজ ফুজায়েল আহমদ, মাওলানা তারেক আহমদ, মাওলানা একরামুল হক জুনাইদ ও মাওলানা লুৎফুর রহমান।

সমাবেশ রেজিস্টারী মাঠে হলেও পূর্ব দিকে বন্দরবাজার, পশ্চম দিকে কাজির বাজার ব্রীজ পর্যন্ত ধর্মপ্রাণ জনসাধারণের পদভারে মুখরিত ছিল। সমাবেশে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে সংসদে নিন্দা প্রস্তাব পাশ, সিলেটে হোটেলসমূহে মদের অনুমোদন বাতিল ও মাদকের অবাধ ছডাছডি বন্ধ ও রায়হান হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী সম্বলিত ৩ দফা দাবী পেশ করা হয়।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...