ছাত্রলীগের অবরোধে অচল চবি

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ১ আগস্ট ২০২২, ৬:১৬ অপরাহ্ণ

দীর্ঘ তিন বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ। রোববার দিবাগত মধ্যরাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে।

কিন্তু ঘোষিত কমিটিতে পদবাণিজ্য ও অছাত্রদের রাখার অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শাখা ছাত্রলীগের উপপক্ষ চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ারের একাংশের নেতাকর্মীরা।

একই ঘটনায় সোমবার সকালে অবরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। অপহরণ করা হয়েছে ট্রেনের গার্ড ও লোকো মাস্টারকে। সকাল থেকে আন্দোলনকারীদের বাধার মুখে ক্যাম্পাস থেকে শিক্ষকদের কোনো বাস শহরে যেতে পারেনি। বন্ধ রয়েছে ক্যাম্পাসে রিকশা ও সিএনজি চলাচলও। এতে কার্যত অচল হয়ে পড়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের সাথে সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন সিএফসি উপপক্ষের মো. আল-আমিন রিমন। এছাড়া সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপুর সাথে সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন রাজু মুন্সী। তিনি সিক্সটি নাইন গ্রুপের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

সহ সভাপতি পদে আরও রয়েছেন নাসির উদ্দিন সুমন, প্রদীপ চক্রবর্তী দূর্জয়, নাজমুল হাসান সানি, রকিবুল হাসান দিনার, প্রীতম কর, মুজিবুর রহমান মুজিব, শায়ন দাস গুপ্ত, আবু বকর তোহা, মুহাম্মদ আবদুল মবিন, মইনুল ইসলাম রাসেল, মির্জা খবির সাদাফ, খালেদ মাসুদ রনিসহ ৭০ জন।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন রাজু মুন্সীসহ দশজন। তারা হলেন- আবদুল্লাহ আল নাহিয়ান রাফি, সাইদুল ইসলাম সাঈদ, মো. ইলিয়াস, শামসুজ্জামান চৌধুরী সম্রাট, আবু সাইদ মারজান, মারুফ ইসলাম, আরমানুল হক চৌধুরী হৃদয়, আহসান হাবিব সোপান, রানা খান ও শামীমা সীমা।

সাংগঠনিক সম্পাদক পদ পেয়েছেন, ফাহিম হোসেন, ফজলে হোসেন, আসাদুজ্জামান আসাদ, আরিফুল ইসলাম, আইয়ুব আলী, সৌমেন দত্ত প্রমুখ।

প্রচার সম্পাদক পদ পেয়েছেন, আশরাফ খান, দপ্তর সম্পাদক এহসান আহমেদ, গ্রন্থ ও প্রকাশনা সম্পাদক অমিত মাহমুদ, সমাজসেবা সম্পাদক মিনহাজুল ঢালী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক সৌরভ শীল।

এর আগে ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই চবি শাখা ছাত্রলীগের দুই সদস্যর কমিটি ঘোষণা করা হয়। তিন বছরের বেশি সময় পর বর্তমান কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হলো। দীর্ঘ সময় পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন চবি ছাত্রলীগের কর্মীরা।

এদিকে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদ ‘কেনাবেচা’ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন চবি ছাত্রলীগের উপপক্ষ চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ারের একাংশের নেতাকর্মীরা। কমিটিতে অছাত্রদের রাখা হয়েছে অভিযোগ করে মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা।

বিক্ষোভে অংশ নেয়া শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শায়ন দাশ গুপ্ত গণমাধ্যমকে বলেন, ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যারা শুরু থেকে জড়িত ছিলেন তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। টাকার বিনিময়ে এ কমিটিতে বাহিরের অনেকেই পদ পেয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হককে একাধিকবার ফোন করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি৷

এদিকে নিরাপত্তাহীনতার কারণ দেখিয়ে ট্রেন ছাড়তে অপারগতা প্রকাশ করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ষোলশহর স্টেশন মাস্টার তন্ময় চৌধুরী বলেন, ‘অবরোধের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গামী কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়নি। ঝাউতলা রেলস্টেশন থেকে আমাদের এক লোকো মাস্টার ও গার্ডকে অপহরণ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ১৭ জুলাই সর্বশেষ চবি শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এরপর দুই দফায় শাখা ছাত্রলীগের কার্যক্রম স্থগিত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। সবশেষ ২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় এ পূর্ণাঙ্গ কমিটি। ১৯ মাস পর ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই চবি ছাত্রলীগের দুই সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কমিটিতে রেজাউল হক রুবেলকে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও ইকবাল হোসেন টিপুকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়। দুই সদস্যের কমিটি দেয়ার ৩ বছর ১৬ দিন পর অবশেষে পূর্ণাঙ্গ কমিটি পেয়েছে চবি ছাত্রলীগ।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...