১৯ বছর পর হারানো মেয়েকে পেলেন মা

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১:০০ পূর্বাহ্ণ

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহায়তায় নিখোঁজের ১৯ বছর পর মেয়েকে ফিরে পেলেন মা। এতদিন পর মাকে পেয়ে আপ্লুত হয়ে পড়েন হারিয়ে যাওয়া মেয়ে। অন্যদিকে হারানো মেয়েকে ফিরে পেয়ে ডিবি পুুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মা।

সম্প্রতি হামিদা খাতুন নামে এক মা তার হারানো মেয়ে লাকিকে খুঁজে পেতে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে আবেদন করেন। সঙ্গে ২০০৩ সালে হারিয়ে যাওয়ার পর কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম থানায় করা জিডি ও চেয়ারম্যান কাছে করা নিখোঁজ আবেদন পত্র সংযুক্ত করেন। এরপর ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণ করে খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলায় হারিয়ে যাওয়া মেয়ের অবস্থান নিশ্চিত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে তার মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

জানা যায়, লাকীর খালা ফিরোজা ঢাকার একটি গার্মেন্টস কারখানায় চাকরি করতেন। তিনি খালার সঙ্গে থাকতেন। তখন লাকীর বয়স আট বছর। একদিন খালা গার্মেন্টসে গেলে লাকী খেলাধুলা এক পর্যায়ে কৌতুহলবশত সদরঘাট এলাকায় লঞ্চে উঠে পড়ে। পরে লঞ্চ ছেড়ে দিলে সে আর নামতে পারে না। সেই ১৯ বছর আগে হারিয়ে যায় লাকী।

ঢাকা থেকে লঞ্চটি খুলনার বড় বাজার ঘাটে ভিড়লে লাকী কী করবে বুঝতে পারছিল না। একপর্যায়ে লঞ্চের সিকিউরিটি গার্ডকে জানায়, সে হারিয়ে গিয়েছে। পরে লঞ্চ ঘাটের সিকিউরিটি গার্ড তাকে তার বাসায় নিয়ে যায়। লাকীকে ইউনিসেফ স্কুলে ভর্তি করান। স্কুলে পড়াশোনার পাশাপাশি সিকিউরিটি গার্ড তাকে দিয়ে বিভিন্ন বাসায় কাজ করাতেন। এভাবে ২ বছর চলে যায়। ঠিকমতো কাজ করতে না পারায় গৃহকত্রীর নির্যাতন সইতে হয় ছোট্ট লাকীকে। পরে কাউকে না জানিয়ে লাকী নিজেই শিহাব নামে এক লোকের বাসায় কাজ নেয়। লাকীকে না পেয়ে সিকিউরিটি গার্ড খোঁজাখুঁজি করেন। একপর্যায়ে লাকীর সন্ধান পান ওই সিকিউরিটি গার্ড।শিহাবের বাসায় হাজির হয়ে সিকিউরিটি গার্ড লাকীকে নিজের মেয়ে বলে দাবি করেন। পাশাপাশি তার বাসায় নেওয়ার চেষ্টা করেন। এদিকে শিহাব লাকীর কাছে জানতে পারেন যে, সিকিউরিটি গার্ড লাকীর আসল বাবা না। তাই শিহাব পুলিশি সহায়তায় লাকীকে নিজ জিম্মায় নিয়ে তার বাসায় পাঁচ বছর রাখেন। সেখান থেকে লাকী তার হারানো বাবা-মাকে ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শুক্রবার ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, লাকীর মায়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে খুঁজে বের করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালায় ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। সবশেষে মহালছড়ি থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করা হয়। সব ধরনের আইন প্রক্রিয়া শেষে তার মায়ের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

লাকীর মা হামিদা বেগম বলেন, মেয়েকে যে ফিরে পাব তা কল্পনাও করতে পারিনি। আমি ভীষণ খুশি। ডিবির প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা। আর যেন কোনো মা এভাবে তার সন্তানকে না হারায়।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...