৫৭ জেলা পরিষদে ভোট আজ, সতর্ক অবস্থানে ইসি

সিলেট অফিস,

  • প্রকাশিত: ১৭ অক্টোবর ২০২২, ৬:২৩ পূর্বাহ্ণ

দেশের ৫৭ জেলা পরিষদে আজ সোমবার অনুষ্ঠিত হবে ভোটগ্রহণ। সকাল ৮টায় ভোট শুরু হয়ে চলবে বিকেল ২টা পর্যন্ত। নির্দলীয় এ নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএমে) ভোটগ্রহণ করা হবে। প্রতিটি ভোটকক্ষে থাকবে সিসিটিভি। প্রতিটি কেন্দ্র ইসি কার্যালয়ের মনিটরিং সেল থেকে পর্যবেক্ষণ করা হবে। এ নির্বাচন নিয়ে সতর্ক অবস্থানে থাকবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আইন অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট জেলার অধীনে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচিত প্রতিনিধিরা এ নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। এর আগে শনিবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।

তিনটি পার্বত্য জেলা বাদে দেশের ৬১টি জেলায় নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। তবে ভোলা ও ফেনীতে সব পদে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় সেখানে ভোটের প্রয়োজন হচ্ছে না। এছাড়া নোয়াখালী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের নির্বাচন আদালতের নির্দেশে স্থগিত করা হয়েছে।

নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২৬ জন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া সাধারণ সদস্য পদে ৬৫ জন এবং সংরক্ষিত সদস্য পদে ১৮ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
ইসির তথ্যানুযায়ী, জেলা পরিষদে মোট ৯২ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। অন্যদিকে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৬০৩ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে প্রার্থীর সংখ্যা এক হাজার ৪৮৫ জন।

এদিকে, নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু ও প্রভাবমুক্ত রাখতে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় ইসি। বিশেষ করে গাইবান্ধা-৫ উপ-নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগে ভোট বন্ধের পর এ নির্বাচনকে বেশ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে ইসি। কোনো জেলায় যাতে এমপি, মন্ত্রী বা প্রভাবশালী কোনো ব্যক্তি প্রভাব খাটাতে না পারেন সেজন্য এরই মধ্যে তাদের সতর্ক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
নির্বাচন কমিশন থেকে একাধিক নির্দেশনা দিয়ে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের কথা বলা হয়েছে। এতে ভোটকক্ষের গোপনীয়তা রক্ষা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। ভোটকক্ষে ভোটররা যাতে মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করতে না পারেন, তা নিশ্চিতে প্রিসাইডিং অফিসার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচনী এলাকায় মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স : ইসির যুগ্ম-সচিব আসাদুজ্জাামান জানান, জেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্য ৯৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা ভোটগ্রহণের আগে দুদিন, ভোটগ্রহণের দিন ও পরদিন দায়িত্ব পালন করবেন।
তিনি বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনে সব ভোটকেন্দ্রের জন্য পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে একটি মোবাইল বা স্ট্রাইকিং ফোর্স এবং র‌্যাবের একটি করে মোবাইল বা স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। ১৯ বৃহত্তর জেলায় দুই প্লাটুন করে বিজিবি রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে মোতায়েন করা হয়েছে। অন্যান্য জেলায় এক প্লাটুন করে বিজিবি রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে মোতায়েন করা হয়েছে।

ভোটার সংখ্যা ও ভোটকক্ষ : জেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ভোটার ৬ হাজার ৮৬৬ জন জনপ্রতিনিধি। ৫৭ জেলার স্থানীয় সরকারের ৪ টি প্রতিষ্ঠানের (সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের তথ্যের ভিত্তিতে এ ভোটার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্র ৪৬২ এবং ভোটকক্ষ হচ্ছে ৯২৫টি। প্রতিটি ভোটকেন্দ্র ও কক্ষে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে বলে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মুহাম্মদ এনাম উদ্দীন জানিয়েছেন।
এর আগে সর্বশেষ ২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর এসব জেলা পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় পর্যায়ে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে জনগণের কাছে সহজে পৌঁছে দেওয়া এবং জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে আরও স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে ২০০০ সালে যে আইন প্রণীত হয়, তা বাস্তবায়ন হয় ২০১৬ সালে।

ঐ বছর বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক জেলা পরিষদ আইনের আওতায় প্রথমবারের মতো নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিটি জেলায় একজন করে চেয়ারম্যান, ১৫ জন সদস্য এবং পাঁচজন সংরক্ষিত নারী সদস্যসহ মোট ২১ জনের সমন্বয়ে জেলা পরিষদ কার্যক্রম শুরু করে।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...