প্রসঙ্গ বাইচাঞ্চ স্বাধীনতা এবং সংবিধান ছুড়ে ফেলা নীরব দেশবাসী !

মতিয়ার চৌধুরী, লন্ডন,

  • প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারি ২০২৩, ৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ

দেশের শীর্ষ দু‘জ্ন রাজনীতিবিদ বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং আব্দুল আউয়াল মিন্টু সাহেবের বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সংবিধান নিয়ে কটুক্তি মুলক বক্তব্যে আমার ঋদয়ে রক্তক্ষরন হচ্ছে। দেশের খ্যাতিমান ব্যাক্তিদের কাছ থেকে জাতি এমনটি প্রত্যাশা করেনি, দেশের সাধারণ একজন নাগরিক হিসেবে আমি এসব অশালীন বক্তব্যের প্রতিবাদ করছি। শুধু প্রতিবাদ নয় ধিক্কার জানাচ্ছি। শুধু আমি কেন আমার মতো অনেককেই তাদের এসব উক্তি আহত করেছে। ইতমধ্যেই তাদের এই বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছে ১১টি সংগঠন এবং দেশের শ্রেষ্টবুদ্ধিজীবীরা।

বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং আব্দুল আউয়াল মিন্টু সাহেব উভয়েই উচ্চমাপের রাজনীতিক। বাবু বলেছেন বাইচাঞ্চ বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, তিনি কোন উৎস থেকে এমন শব্দ উচ্চারণ করেন আমার বোধগম্য নয়। আব্দুল আউয়াল মিন্টু সাহেব বলেছেন সংবিধান ছুড়ে ফেলবেন। বাংলাদেশ দীর্ঘ আন্দোন সংগ্রামের ধারাবাহিকতার মধ্যদিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীন হয়েছে। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষনের পর পরই দেশব্যাপী মানুষ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। তিনি বলেছিলেন ’’এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম-এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’’ ‘’ আমি যদি হুকুম দেবার না-ও পারি তুমাদের যার যা কিছূ আছে তা নিয়ে রুখে দাড়াও শত্রুর মোকাবেলা কর। আমি নিজেও সেদিন একজন কিশোর হিসেবে সবার সাথে লাঠি নিয়ে রুখতে গিয়েছিলাম। ,অপারেশন সার্চলাইট শুরু হলে প্রথমে প্রতিরোধ গড়ে তোলে আনসার, পুলিশ ইপিআর, শুরু হয় প্রতিরোধ যুদ্ধ। চারটি মূলমন্ত্রকে বুকে ধারন করে নয়মাসের মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়। স্বাধীনতাকে ‘’ বাইচাঞ্চ বলা’’ মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা। শুধূ অস্বীকারই নয় সম্ভ্রম হারানো তিন লক্ষ মা-বোন ও ত্রিশ লক্ষ শহীদকে অসম্মান করা।

অন্যদিকে জনাব আব্দুল আউয়াল মিন্টু সাহেব বলেছেন সংবিধান ছুড়ে ফেলবেন। উভয়ের প্রতি আমার যথেষ্ট সম্মান রয়েছে , তাদের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি এসব বক্তব্য কি স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করা নয়? দেশের যেকোন ব্যাক্তি এজাতীয় মন্তব্য করলে রাষ্ট্র্রদ্রোহিতার সামিল হয়। দেশের সচেতন মহল বিবেচনা করবেন তাদের এই বক্তব্য রাষ্ট্র দ্রোহিতার আওতায় পড়ে কিনা?

সমাজতন্ত্র-গণতন্ত্র-ধর্মরিপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ এই চারটি মূলনীতিকে বুকে ধারন করে সংগঠিত হয় মুক্তিযুদ্ধ ধর্মবর্ণ নির্বিশেষ সকলে অংশ নেয় যুদ্ধে এবং ১৯৭২ সালে এই চার মূলনীতির আলোকে রচিত হয় আমাদের পবিত্র সংবিধান। আমি জানিনা এটি তাদের নিজস্ব না দলীয় বক্তব্য ? তাদের দল থেকেও এখন পযর্ন্ত মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তারাও তাদের এবক্তব্য প্রত্যাহার করেননি। ইতমধ্যেই দেশের ১১টি সংগঠন এবং সচেতন নাগরিক সমাজ এর তীব্র প্রতিবাদ কেরেছেন। দেশের একটি বেসকারী টিভি চ্যানেলে এনিয়ে টক‘শো হচ্ছে, টক‘শোতে অংশ নেয়া সকলেই এর নিন্দা জানিয়েছেন। সরকার থেকেও এযাবত কোন প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। আমার বিশ্বাস সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষ সংবিধান মাফিক ব্যবস্থা নেবেন। এমনটি প্রত্যাশা করে আজকের লিখার ইতি টানলাম।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...