দেশে প্রথমবারের মতো ‘ব্রেন ডেড’ রোগীর কিডনি দুজনের দেহে প্রতিস্থাপন

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারি ২০২৩, ৬:৫৩ অপরাহ্ণ

দেশে প্রথমবারের মত ‘ব্রেইন ডেড’ মানুষের কিডনি দুইজন কিডনি আক্রান্তের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাদের শরীরে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, তারা ভালো আছেন।

বুধবার রাতে ২০ বছর বয়সী সারা নামের এক নারীর শরীর থেকে কিডনি দুটি ওই দুইজন নারীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়।

একটির ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। অন্যটি করেছে ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেনাল ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলালের নেতৃত্বে একটি দল বিএসএমএমইউর আইসিইউতে মারা যাওয়া ২০ বছর বয়সী এক তরুণীর দুটি কিডনি অপসারণ করেন। বুধবার মাঝরাতেই কিডনি দুটি অন্য দুজনের শরীরে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়।

একটি কিডনি দেয়া হয়েছে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন ৩৪ বছর বয়সী এক নারীকে। অপর কিডনি দেয়া হয়েছে জাতীয় কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩৯ বছর বয়সী এক নারীর শরীরে।

ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, মানুষের মস্তিষ্ক মৃত হয়ে গেলেও শরীরের অন্যান্য অঙ্গ পুনরায় ব্যবহার করা যায়। তারা দীর্ঘদিন এই কাজটি করার চেষ্টা করছিলেন। সম্প্রতি ন্যাশনাল ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এ বিষয়ে অনুদানের ব্যবস্থা করলে কাজটি বেগবান হয়।

তিনি বলেন, আগেও কয়েকটি ‘ক্যাডাভেরিক ডেথ’ পাওয়া গিয়েছিল, কিন্তু সেগুলো থেকে প্রতিস্থাপন করা যায়নি। তবে বিএসএমএমইউতে ভর্তি সারা ইসলাম নামে ২০ বছর বয়সী এক তরুণীর কিডনি প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম হন তারা।

‘জন্মগত ত্রুটি ছাড়াও তিনি ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত ছিলেন। বাইরের একটা হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হয়, পরে জটিলতা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হন। অবস্থা সঙ্কটাপন্ন ছিল, এ অবস্থায় আমাদের চিকিৎসকরা রোগীর স্বজনদের কাউন্সেলিং করা শুরু করেন। এক পর্যায়ে রোগীর মা যখন বুঝতে পারেন, তার মেয়ের বাঁচার সম্ভাবনা আর নেই। তখন তিনি সম্মতি দেন।’

ডা. হাবিবুর রহমান আরও বলেন, রোগীর মা সম্মতি দেয়ার পর চিকিৎসকরা প্রস্তুতি নেন। কিডনি প্রতিস্থাপন করতে ইচ্ছুক পাঁচজন রোগীকে বাছাই করা হয়। বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় সারা ইসলামকে মৃত ঘোষণা করা হয়। রাত ৯টায় দুজনের শরীরে কিডনি প্রতিস্থাপনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন তারা।

তিনি বলেন, আমরা রাত সাড়ে ১০টার সময় সারার শরীরে থেকে কিডনি অপসারণ শুরু করি। জটিল অপারেশন ছিল, দুই থেকে আড়াই ঘণ্টায় কিডনি বের করে আনি।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...