সিলেটে হুমকি পাওয়া কাউন্সিলর প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা

সিলেট অফিস,

  • প্রকাশিত: ১২ জুন ২০২৩, ৮:২১ অপরাহ্ণ

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সাঈদ মো. আবদুল্লাহকে প্রধান আসামি করে ১৭জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া মামলায় আরও ৭০-৮০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। গতকাল রোববার (১১ জুন) রাতে মহানগর পুলিশের বিমানবন্দর থানায় আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) ও স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইনে মামলা হয়েছে।

নৌকার মেয়র প্রার্থীর কর্মীকে মারধরের অভিযোগে এনে সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের অর্থ সম্পাদক মো. শাহানুর আলম বাদী হয়ে সাঈদসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ৭০-৮০ জনকে আসামি করে মামলাটি করেন।

সোমবার (১২ জুন) সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (মিডিয়া) সুদীপ দাস মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনায় দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ।

মামলার এজহারে আসামি করা হয়েছে- বনকলাপাড়া (দিঘীরপাড়) এলাকার মৃত তখলিছুর রহমানের ছেলে সাঈদ আব্দুল্লাহ (৩৬), পশ্চিম পীর মহল্লার ঐক্যতান ২২০ নং বাসার আব্দুল খালিকের ছেলে আবুল কালাম মাস্টার (৪৫), বনকলাপাড়া নূরানী ১০৪/৩ নং বাসার কাজী মিজান (২৯), পশ্চিম পীরমহল্লা ৩৬ নং বাসার সন্দু মিয়ার ছেলে জুনেদ আহমদ (৩৫), অগ্রণী আ/এ এলাকার গেসু মিয়ার ছেলে সোহাগ মিয়া (২৬), বনকলাপাড়া এলাকার শাহীন (৩০), একই এলাকার ৮২ নং গলির মুমিন মিয়ার ছেলে রাজন আহমদ, কানাইঘাটের ভাল্লুকমারা গ্রামের মৃত তাহের আলীর ছেলে আলাউদ্দিন (৩৭), বকলাপাড়া এলাকার নূরানী ৪৭ নং বাসার ছবের মিয়া (৩৪), একই এলাকার নূরানী ৬৮/১ নং বাসার মনির উদ্দিনের ছেলে এমাদ উদ্দিন সুয়েব (৩৩), বাগেরহাটের বড় বাদুড়া গ্রামোর মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মতিউর রহমান মৃধা (৪২), বনকলাপাড়া এলাকার নূরানি ৮৩/২৫ নং বাসার মীর হোসেন ভূইয়ার ছেলে আমিন মিয়া (৩২), একই এলাকার নূরানি ৪০ নং বাসার আল আমিন (২৮)।

এর আগে গত শুক্রবার কাউন্সিলর প্রার্থী সাঈদ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র দলবল নিয়ে বাসার সামনে মহড়া ও হত্যার হুমকির অভিযোগে মামলা করেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাঈদকে নির্বাচন থেকে সরাতে তিনি সহযোগীদের নিয়ে মহড়া দিয়েছেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। সাঈদের বাসার সামনে সশস্ত্র মহড়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানোর পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ মামলায় পুলিশ এখন পর্যন্ত তিন আসামিকে গ্রেফতার করেছে। তবে ভিডিও ফুটেজে দেখা আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার ও অস্ত্রধারীকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

গতকাল রোববার করা মামলায় শাহানুর আলম উল্লেখ করেন, আসন্ন নির্বাচনে তিনি নৌকা মার্কার মেয়র প্রার্থীর পক্ষে গঠিত গৌছ উলুম জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা, পশ্চিম পীরমহল্লা ভোট কেন্দ্র কমিটির যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন। আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর পাশাপাশি তিনি কাউন্সিলর প্রার্থী ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আফতাবের প্রচারে সম্পৃক্ত রয়েছেন। গত ৬ জুন রাত ৮টায় প্রচার কার্যক্রম শেষে তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এটিএম হাসান জেবুলের সঙ্গে সুবিদবাজারে গিয়ে সাক্ষাৎ করেন এবং প্রচারের দিক-নির্দেশনার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর ৫০০ পোস্টার সংগ্রহ করেন।

এ পোস্টারগুলো ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে লাগানোর কথা ছিল উল্লেখ করে শাহানুর মামলায় অভিযোগ করেন, সুবিদবাজার থেকে ফেরার সময় রাত সাড়ে ১০টার দিকে কাউন্সিলর প্রার্থী সাঈদ মো. আবদুল্লাহর নেতৃত্বে ৩৫-৪০টি মোটরসাইকেল তাকে ‘আওয়ামী লীগের দালাল’ বলে ধাওয়া দেয়। একপর্যায়ে হকিস্টিক, লোহার রডসহ লাঠিসোঁটা দিয়ে রাস্তায় ফেলে মারধর করে ডান হাত ভেঙে ফেলে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে পালিয়ে যায়। এরপর আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। বর্তমানে তিনি ওসমানী হাসপাতালের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কেবিনে চিকিৎসাধীন আছেন।

উল্লেখ্য, আগামী ২১শে জুন সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সিলেট সিটির ৭ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে আফতাব হোসেন খাঁন ঘুড়ি প্রতীক, সায়ীদ মো. আবদুল্লাহ লাটিম প্রতীক ও মো. জাহিদ খান সায়েক ঠেলাগাড়ি প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...