ডা. মুরাদকে বাদ দিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ৫ আগস্ট ২০২৩, ৬:০১ অপরাহ্ণ

সরিষাবাড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি থেকে বাদ পড়লেন সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এমপি। সন্মেলনের দীর্ঘ ১০ মাস পর জেলা আওয়ামীলীগের অনুমোদন দেয়া জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান হয়নি তার। এ নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সরিষাবাড়ী অনার্স কলেজ মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক বাবু অসীম কুমার উকিল, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সাবিনা ইয়াসমিন, জামালপুর পৌরসভার মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানু প্রমুখ।

সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে সভাপতি পদে ছানোয়ার হোসেন বাদশা ও সাধারণ সম্পাদক পদে তেজগাঁও কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদের নাম ঘোষণা করা হয়। এরপর দীর্ঘ ১০ মাস অতিবাহিত হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হয়নি। ফলে শুরু হয় আলোচন-সমালোচনা। অবশেষে চলতি বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দ্রের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ৭১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়।

নতুন কমিটিতে সহসভাপতি পদে মো. আব্দুল গণি, পৌরসভার মেয়র মনির উদ্দিন, মোস্তাফিজুর রহমান, সরিষাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সরোয়ার জাহান, আবুল হোসেন, আনিছুর রহমান, একেএম আনিছুর রহমান, মো. আনোয়ারুল কবীর, যুগ্ম সম্পাদক পদে কামরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম, জহুরুল ইসলাম ও খোরশেদ আলমের নাম ঘোষণা করা হয়।

নতুন এই কমিটিতে সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের নাম না থাকায় হতবাক হন তার সমর্থিত নেতাকর্মীরা। তারা বলেন, জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্র করে মুরাদ হাসানকে নতুন এ কমিটি থেকে বাদ দিয়েছেন। তারা এর তীব্র প্রতিবাদ জানান। সেইসাথে নতুন এই কমিটিতে মুরাদ হাসানের নাম অন্তর্ভুক্ত করার দাবিও জানান তারা।

এদিকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন হোসেন শিবলু মুঠোফোনে বলেন, নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই জন্য তিনি কেন্দ্রের কাছে ক্ষমা প্রার্থনাও করেন। কিন্তু কেন্দ্র থেকে তাকে এখনো ক্ষমা করেছেন কি-না সে বিষয়ে তার জানা নেই। কেন্দ্র যদি ক্ষমা না করে থাকে তাহলে কিভাবে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগে অন্তর্ভুক্ত হন সে বিষয়ে পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন তিনি।

এছাড়াও তিনি অভিযোগ করে বলেন, শুনেছি এই কমিটি নিয়ে মুরাদ হাসান জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছেন। একজন এমপি হয়ে কিভাবে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নিয়ে মন্তব্য করেন সে বিষয়েও কেন্দ্রের কাছে বিচার চান তিনি।

এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছানোয়ার হোসেন বাদশা ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ বলেন, সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগকে গতিশীল করতে ৭১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এখানে বিতর্কের কোন স্থান নেই।

এর আগে, ২০২১ সালে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সাথে ফোন আলাপ ফাঁস হওয়ার পর ডা. মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের নির্দেশ দেন। এই খবরে ৭ ডিসেম্বর তার নির্বাচনী এলাকা জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে আনন্দ মিছিল করেন আওয়ামী লীগসহ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। আনন্দ মিছিলটি আরামনগর বাজার ট্রাকস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা করা হয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা মুরাদ হাসানের কুশপুতুল দাহ করেন।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...