ভারতের ঐতিহাসিক চন্দ্র জয়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক,

  • প্রকাশিত: ২৪ আগস্ট ২০২৩, ৩:৩৩ পূর্বাহ্ণ

চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে প্রথম কোনো দেশ হিসেবে স্পর্শ করলো ভারতের মহাকাশ যান চন্দ্রযান-৩ । বুধবার ভারতের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা চার মিনিটে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর মাটি স্পর্শ করে মহাকাশযানটির বিশেষ অংশ ল্যান্ডার বিক্রম। যা ভারতবাসীর জন্য বিরল গর্বের বিষয়। চতুর্থ দেশ হিসেবে এবার পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদের মাটি স্পর্শের গৌরব অর্জন করেছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি।

বিক্রমের অবতরণ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বেঙ্গালুরুতে অবস্থিত ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর কমান্ড কক্ষে আনন্দ-উল্লাসে ফেটে পড়েন বিজ্ঞানীরা। তবে তাদের মাঝে ব্যাপক উৎকণ্ঠাও রয়েছে।

বিক্রমের চূড়ান্ত পর্যায়ের এই অবতরণ প্রক্রিয়ায় সময় লাগবে মোট ১৯ মিনিট। তারপরই তৈরি হবে এক নতুন ইতিহাস। এর আগে এই ইতিহাস গড়েছে কেবল যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চীন। খবর এনডিটিভি।

ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) চন্দ্রযান-৩ এর অবতরণ দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করে। লাখো মানুষ এই সম্প্রচারের সাক্ষী হয়েছে। এ উপলক্ষে দেশটির সব স্কুল খোলা রাখা হয়। ব্রিকস সম্মেলনে দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চ্যুয়ালি ইসরোর আয়োজনে যুক্ত হন।

আগের বার মন ভেঙেছিল ভারতীয়দের। চন্দ্রযান-২-এর ল্যান্ডার সফলভাবে চন্দ্র পৃষ্ঠ স্পর্শ করতে পারেনি। ২.১ কিলোমিটারের কাছাকাছি উচ্চতায় এসে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরের সেই রাত এখনও অনেকের স্মৃতিতে অটুট। এবারেও তাই ল্যান্ডিং নিয়ে বাড়তি উৎকণ্ঠা সকলের। তবে এবার ‘চন্দ্রযান-৩’ নিয়ে বড় প্রত্যাশায় ছিলেন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইসরো) বিজ্ঞানীরা।

‘চন্দ্রযান-৩’ এর ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে অবতরণ করেছে। চাঁদের দক্ষিণ মেরুর তথ্য এখনো অজানা রয়েছে। চন্দ্রযান-৩ সফল হওয়ায় চাঁদের রহস্যময় দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছাতে পারা প্রথম দেশ হলো ভারত।

এর আগে চন্দ্রযান-২ এর ল্যান্ডারের নামও রাখা হয়েছিল বিক্রম। দেড় হাজার কেজি ওজনের চন্দ্রযান-৩ এর এ ল্যান্ডার তার পেটের মধ্যে বহন করছে ২৬ কেজি ওজনের রোভার বা রোবটযান প্রজ্ঞানকে।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ইসরোর প্রতিষ্ঠাতা বিক্রম সারাভাইয়ের (১৯১৯-১৯৭১) নামানুসারে এই ল্যান্ডারের নামকরণ। ভারতীয় এই জ্যোতির্বিদ দেশটির মহাকাশ গবেষণার উদ্যোগের পাশাপাশি পারমাণবিক শক্তি উন্নয়নে অবদান রেখেছিলেন। তাকে ভারতের ‘মহাকাশ কর্মসূচির জনক’ বলা হয়ে থাকে। ১৯৬৬ সালে তিনি পদ্মভূষণ ও ১৯৭২ সালে মরণোত্তর পদ্মবিভূষণ খেতাব লাভ করেন।

ছয় চাকার প্রজ্ঞান চাঁদের পৃষ্ঠে ঘুরে ঘুরে পৃথিবীতে পাঠাবে তথ্য আর ছবি। চন্দ্রপৃষ্ঠের রাসায়নিক গঠন বিশ্লেষণ এবং পানির সন্ধান করবে। এই রোভার সক্রিয় থাকবে চাঁদের এক দিন, যা পৃথিবীর ১৪ দিনের সমান। ৩ হাজার ৯০০ কেজি ওজনের চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযান তৈরি হয়েছে অরবিটার, ল্যান্ডার ও রোভার- এই তিনটি অংশ নিয়ে।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...