ইংলিশ-স্লোভাকিয়ান ও বাঙ্গালী কৃষ্টি-সংস্কৃতির সংমিশ্রণে লন্ডনের পাঁচ তারকা হোটেলে বিয়ের অনুষ্ঠান

মতিয়ার চৌধুরী,

  • প্রকাশিত: ২৪ আগস্ট ২০২৩, ৩:৫৮ পূর্বাহ্ণ

ব্রিটিশ-বাংলাদেশী সাংবাদিক, স্বদেশ-বিদেশ পত্রিকার সম্পাদক বাতিরুল হক সরদার ও স্কুল ডেটা অফিসার কবি রুমি হকের মেয়ে অর্পার বিয়ে হয়ে গেলো গত ২০ আগষ্ট রবিবার রাতে সেনেট্রল লন্ডনের ৮ নর্থঅ্যম্বুলান্ড এ্যাভিনিউয়ের পাঁচ তারকা হোটেলে। হলভর্তি স্লোভাকিয়ান-বাংলাদেশী ভারতীয় ইংলিশ ও ম্যালটিক্যালচারাল সোসাইটির হাজারও অতিথির ঊপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত হয়ে ঊঠে । অনুষ্ঠানে ছিলো বাংলা, ইংরেজী ও ভারতীয় গান আর ও বাংলাদেশী, ইংলিশ ও স্লেভাকিয়ান কৃষ্টি ও সংস্কৃতির মিশ্র আয়োজন। মনকাড়া আয়োজন ছিল অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে। পশ্চিমা সংগীতের সুরের তালে তাল মিলিয়ে বর কনে হলে প্রবেশ করেন ।

তারপরই মাস্টার অব দ্যা সিরিমনি ঘোষনা দেন যে তাদেরকে এখন যৌথভাবে কাজ করার প্রথম পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হবে । অতিথিদের কেউ একজন হলভর্তি অতিথিদের সামনে কাঁচের একটি প্লেট সজোরে আঘাত করে ফ্লোরে ফেলে ভেংগে টুকরা টুকরা করে ফেলেন । তারপরই নববিবাহিত স্বামী স্ত্রী দুজনে মিলে হলভর্তি দর্শকের সামনে ঝাড়ু দিয়ে পরিস্কার করেন। তার একটু পরেই শুরু হয় বক্তব্যের পালা । প্রথমেই বক্তব্য রাখেন বরের ছোট ভাই । তারপর কনের ছোট বোনেরা । হালকা কৌতুক আর বোনের সংঙ্গে তাদের ভালবাসার কথা আর দুলাভাইয়ের কাছে বোনকে সুখে রাখার অংগীকার আর প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তারা । বক্তৃতা পর্বের শেষ পর্যায়ে বর ও কনে মাইক হাতে নিয়ে তাদের প্রেম ভালবাসার কথা বলেন । মুরব্বীদের কাছে দোয়া আর আশীর্বাদ কামনা করেন। বক্তৃতার শেষে বর কনে গানের তালে নেচে অতিথিদের আনন্দ দেন. তাদের প্রেম কাহিনীও মনে দাগ কাটার মত। কনে অর্পা, পুরো নাম সুচনা হক অর্পা। কাজ করেন ব্রিটিশ পার্লামেন্টে , পদবী সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার ।আর বর ডমিনিক তথ একজন ব্যবসায়ী । দুইজনেরই বন্ধু এমন একজন সাধারণ বা কমন বন্ধুর মাধ্যমে একে অপরের পরিচয় । তারপর ভালোলাগা – ভাললাগা থেকে ভালোবাসা এরপর প্রণয়।

কনের বাবা -মায়ের দেশের বাড়ী বাংলাদেশে সিলেট বিভাগের ওসমানীনগরে, আর বরের বাবা মায়ের দেশের বাড়ী স্লোভাকিয়ায় । অর্পা তার ভালেবাসার কথা বাবা মাকে জানালে তারা বলেন, কথা বলতে হবে বরের বাবা মায়ের সংগে । যেই কথা সেই কাজ । অর্পার মা বাবা চলে যান স্লোভাকিয়ায় । কথা বলেন বর ডমিনিকের বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা ইয়ান তথ আর ডমিনিকের মা নার্স ভিরকা ততভার সংঙ্গে । ছেলের প্রেম বলে কথা ছেলের কথা তাঁরাও ফেলতে পারেন না । রাজী হয়ে যান সকল শর্তে । অর্পার প্রেমে বিভোর ডমিনিক প্রেয়সীর সকল শর্ত মেনে ইসলাম ধর্মানুয়ায়ী বিয়ে করেন কিছুদিনের মধ্যেই । তারপরই হয় রবিবারের আয়োজন। দুই সংস্কৃতির এবং দুই দেশের বর কনের কারণে এই বিয়েতে অতিথিদের আগ্রহের কমতি ছিল না। হলের কানায় কানায় পূর্ণ অতিথিরা উপভোগ করেছেন সমগ্র অনুষ্ঠান। প্রথম পর্বের মিশ্র আয়োজনের পর অনেকেই ভেবেছিলেন এখানেই সোনুষ্ঠান শেষ। কিন্তু না ।ডিনারের পর শুরু হয় বাংলাদেশী সংস্কৃতির অনুষ্ঠান মালা । বর কনের মালা বদল , আয়নায় একে অপরের মুখ দেখা , মিস্টিমুখ করা আর সম্মিলিত কেক কাটা ।সমগ্র অনুষ্ঠানের ফাকে ফাকে চলে অতিথি আর শিল্পীদের গানের তালে তালে নাচ ।সবশেষে বর কনেকে তথা মেয়ে অর্পা আর মেয়ে জামাই ডমিনিকে সংগে নিয়ে টেবিলে টেবিলে অতিথিদের সংগে পরিচয় করিয়ে দেন সাংবাদিক বাতিরুল হক সরদার ও কবি রুমী হক । একরাশ আনন্দ অনভুতি প্রায় মধ্যরাতে বাড়ীর দিকে পা বাড়ান অতিথিরা । সকলের দোয়া আর আশীর্বাদে শেষ হয় অর্পা আর ডমিনিকের বিবাহ ঊত্তর সম্বর্ধনা অনুষ্ঠান ।উভয় পরিবারের বাবা মায়ের চাওয়া তাদের সন্তান যেন সুখী হয়।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...