‘দই বেচে বই বিলানো’ জিয়াউলের পাশে দাঁড়াচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ৬:১২ অপরাহ্ণ

এ বছর একুশে পদক পেয়েছেন ২১ জন। যাদের একজন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সীমান্তঘেঁষা ভোলাহাট উপজেলার মুসরিভূজা গ্রামের বাসিন্দা জিয়াউল হক (৯১)।

দই বিক্রির টাকায় তিনি গড়ে তুলেছেন লাইব্রেরি ও একটি বিদ্যায়তন। এ ছাড়া স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই দেওয়াসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত অনুদান দেন সাদা মনের মানুষ হিসেবে পরিচিত জিয়াউল হক।

অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে জিয়াউল হকের হাতে ‘একুশে পদক ২০২৪’ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় সরকারপ্রধান রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘একুশে পদক’ দেন।

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে জিয়াউল হকের সমাজ সেবামূলক কাজের প্রশংসা করেন এবং পাঠাগরের জন্য একটি ভবন নির্মাণ করে দেওয়ার ঘোষণা দেন। তার প্রতিষ্ঠিত স্কুলটি সরকারিকরণের ব্যবস্থা করা যায় কি-না সে উদ্যোগও নেবেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউল হককে পুরস্কৃত করতে পেরে আমরা আনন্দিত। আমরা সারা বাংলাদেশে যদি খোঁজ করি এরকম বহু গুণিজন পাবো। হয়তো দারিদ্রের কারণে না হয় কোনো সামাজিক কারণে হয়তো নিজেদের মেধা বিকাশের সুযোগ পাননি। কিন্তু সমাজকে কিছু তারা দিয়েছেন, মানুষকে দিয়েছেন, সেটাই সবচেয়ে বড় কথা। তারা মানুষের কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করেছেন। হয়তো যে অর্থ তিনি উপার্জন করেছেন তা দিয়ে আরো ভালোভাবে বাঁচতে পারতেন, জীবনকে গড়ে তুলতে পারতেন। কিন্তু নিজের উন্নতি বা ভোগ বিলাসের দিকে না তাকিয়ে তিনি জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন যারা লেখাপড়া করতে পারছেনা তাদের জন্য।

প্রধানমন্ত্রী যারা সমাজের উচ্চস্তরে আছেন তাদেরকে এই ধরণের ত্যাগী মানুষগুলোকে খুঁজে বের করারও অনুরোধ করেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সীমান্তঘেঁষা ভোলাহাট উপজেলার মুসরিভূজা গ্রামের বাসিন্দা জিয়াউল হক। ওই অঞ্চলের মানুষের কাছে পরিচিত ‘বইবন্ধু’ হিসেবে। তিনি একজন প্রকৃত বইবন্ধু, জনবন্ধু, সমাজবন্ধু। মাথায় দই নিয়ে বিক্রি করেন আর ক্রয় করেন শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবই, শিক্ষা উপকরণ। সেগুলো তাদের দেন বিনামূল্যে।

একুশে পদকের তালিকায় নাম শোনার পর জিয়াউল হক বলেছিলেন, ‘এতে আমি ভীষণ আনন্দিত। আমার সমাজসেবা করার আগ্রহ আরও বেড়ে গেলো।’

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...