রেকর্ড নয় সবুজের ভাবনায় শিরোপা

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ১৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৫৭ অপরাহ্ণ

রবিবার মোহামেডানের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে প্রিমিয়ার ডিভিশন হকি লিগে সর্বোচ্চ ৩৪ গোল করে ফেলেছেন সোহানুর রহমান সবুজ। মেরিনার ইয়ংস ক্লাবের এই ডিফেন্ডার গত লিগে ৩৩ গোল করে হয়েছিলেন সর্বোচ্চ গোলদাতা। এবারও সেরা হওয়ার পথেই হাঁটছেন।

এবার তার সামনে হাতছানি হকি লিগের ইতিহাসে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার। যে রেকর্ডটা ২৯ বছর ধরে নিজের কাছে রেখেছেন রফিকুল ইসলাম কামাল। সাবেক এই তারকা ১৯৯৫ সালে ঊষা ক্রীড়া চক্রের হয়ে করেছিলেন ৪০ গোল। সবুজকে কামালের রেকর্ড ভাঙতে বাকি দুই ম্যাচে করতে হবে কমপক্ষে সাত গোল। প্রতিপক্ষ যখন অ্যাজাক্স স্পোর্টিং এবং বাংলাদেশ পুলিশ, তখন রেকর্ডটা নিজের করে নেওয়া খুব সম্ভব। তবে নিজের রেকর্ড নয়, সবুজের ভাবনায় এখন শুধুই শিরোপা জয়।

রফিকুল ইসলাম কামাল স্টিক তুলে রেখেছেন বহুদিন হলো। জাতীয় দলের সাবেক এই তারকা বর্তমানে পুরোদস্তুর হকি সংগঠক। ঊষা ক্রীড়া চক্রের ক্রীড়া সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন। নিজের রেকর্ড আর নিজের থাকুক, সেটা তিনিও চান না; বরং চান এই প্রজন্মের কেউ একজন তার রেকর্ডটা ভেঙে দিক।

বিষয়টা তুলতেই ফোনের ওপাশ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে বললেন কামাল, ‘এবার তো মনে হচ্ছে রেকর্ডটা ভেঙেই যাবে। সবুজের খুব ভালো সুযোগ আছে। আমিও চাই নতুন কেউ একজন রেকর্ডটা নিজের করে নিক। ওর পরে তো আমার নামটা থাকবেই।’ এবারের লিগের গোলের হিসাবটা সবুজের কাছে খানিকটা গোলমেলে। লিগের প্রথম পর্বে দিলকুশা স্পোর্টিংয়ের বিপক্ষে ফেডারেশন থেকে অফিশিয়াল তালিকায় দেখানো হয়েছে তার চার গোল। কিন্তু সবুজের অনুমান সেই ম্যাচে তার গোল সংখ্যা ছয়। এই ভ্রান্তি নিয়ে অবশ্য খুব বেশি ভাবিত নন।

মোহামেডানের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে আগের লিগের গোলসংখ্যাকে ছাড়িয়ে যাওয়া সবুজ বলেন, ‘আমার হিসাবে গোল হয় ৩৬টা। তবে ফেডারেশনের হিসাবটাই এখানে ধর্তব্য। তাই ৩৪ গোল নিয়ে পরের দুই ম্যাচে খেলব। চেষ্টা করব বেশি বেশি গোল করার।’ তার মানে কামালের রেকর্ডটা ভেঙে দিতে চান? এমন প্রশ্নে সবুজ পুরোদস্তুর বনে গেলেন মেরিনার, ‘দেখুন, আমি মোটেই সেই রেকর্ড নিয়ে চিন্তিত নই। আমার ভাবনায় এখন শুধুই শিরোপা ধরে রাখা। শেষ দুই ম্যাচে জিতলে আমাদের সম্ভাবনা থাকবে শিরোপা জয়ের। অবশ্য সে ক্ষেত্রে মোহামেডানেরও শেষ দুই ম্যাচে পয়েন্ট খোয়াতে হবে। সে যা-ই হোক, সেটা তো আমাদের হাতে না। আমরা তাই অ্যাজাক্স ও পুলিশের বিপক্ষে বড় জয়ের লক্ষ্যেই খেলতে নামব। সেটা করতে গিয়ে যদি রেকর্ড হয় ভালো, না হলেও ক্ষতি নেই। আমার কাছে দলের সাফল্যই সবার ঊর্ধ্বে।’

বাংলাদেশে গেল কয়েক বছরে সবুজের মতো আরও কয়েকজন ডিফেন্ডারের খোঁজ মিলেছে, যারা পিসিতে ভীষণ নিখুঁত। আবাহনীতে খেলা আশরাফুল ইসলামের ফর্মটা এবার তেমন ভালো নয়। নইলে তিনিও হতে পারতেন সবুজের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী। এর আগে সদ্য খেলা ছেড়ে মেরিনার্সের সহকারী কোচ হওয়া মামুনুর রহমান চয়নও ডিফেন্স সামলে পিসি থেকে করেছেন অগুনতি গোল। সাবেক হওয়ার পথে থাকা আরেক ডিফেন্ডার খোরশেদুর রহমানও ছিলেন পিসি স্পেশালিস্ট।

তবে তারা কেউ পারেননি সবুজের মতো কামালের ২৯ বছরের রেকর্ডটাকে হুমকির মুখে ফেলতে। সবুজ ফর্মটা পরের দুই ম্যাচে টেনে নিতে পারলে হকি টার্ফে লেখা হবে নতুন ইতিহাস। এর সঙ্গে শিরোপাটা জিততে পারলে তো কথাই নেই, ষোলোকলা পূর্ণ হবে সবুজের।

 

♦ সুদীপ্ত আনন্দ’র প্রতিবেদন, দেশ রূপান্তর থেকে নেয়া।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...