মাদক গডফাদারের তালিকায় বদির দুই ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে সিআইডি

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৫:৩৮ অপরাহ্ণ

কক্সবাজারে ইয়াবা কারবারে সেই জেলার আলোচিত রাজনীতিবিদ ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির দুই ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে সিআইডি। কক্সবাজারের ১০ মাদক গডফাদারের মামলা তদন্ত করতে গিয়ে এই সংশ্লিষ্টতা মিলেছে।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগস্থ সিআইডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া।

সিআইডি প্রধান জানান, ১০ মাদক মামলা মাদকের গডফাদারদের গাড়ি, বাড়ি, জমি, ব্যাংকে থাকা টাকা ক্রোক করা হয়েছে। এসব মামলা ২০১৭ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে হয়েছে।

সিআইডি প্রধান বলেন, আমরা যারই সম্পৃক্ততা পাব তাকে গ্রেফতার করব। মাদক মামলাগুলোর মধ্যে কক্সবাজারের ১০টি, বগুড়ায় একটি, রংপুর একটি, ডিএমপিতে একটি ও ফরিদপুরে একটা মামলা। এসব মামলায় সম্পৃক্ততা যারই পাব তাকেই আইনের আওতায় আনব। সে যেই হোক না কেন।

১০ মাদক মামলার তদন্ত করতে গিয়ে আমরা বদির ভাইসহ অনুসারীদের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি। তার ভাইরাও আছে এবং অনুসারীও আছে। আব্দুস সুকুর ও আমিনুর রহমান তারা বদীর ভাই বলেও জানান তিনি।

বদির এই দুই ভাই মিয়ানমার থেকে ইয়াবার চালান আনত এরপর তা তাদের ইয়াং ছেলে বা নিয়োজিত লোকদের দিয়ে ব্যবসা চালাত। আমরা তাদের সম্পত্তিও ক্রোক করেছি। আমরা ইতোমধ্যে বদীর দুই ভাইয়ের ৬.৯ একর জমি শনাক্ত করেছে। সেগুলো পরবর্তীতে ক্রোক করা হবে। এছাড়াও ৪০ শতাংশ জমির সন্ধান মিলেছে। যার বাজার মূল্য ১ কোটি টাকা বলেও তার বক্তব্যে যোগ করেন সিআইডি প্রধান।

মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, ১০ মামলার তদন্ত শেষে আমরা আদালতের অনুমতি নিয়ে তাদের সম্পত্তিগুলো ক্রোক করেছি। বাকী মামলার সম্পত্তিগুলো ক্রোক করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। দেশের ৬৪ জেলায় মাদক মামলা আছে। আপনারা দেখেছেন প্রতিবছর ৮০ থেকে ৮৫ হাজার মাদক মামলা হয়। বিভিন্ন সময়ে মাদক বহনকারীদের গ্রেফতার করা হয় কিন্তু গডফাদাররা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকে। যেহেতু আমরা গডফাদারদের নিয়ে কাজ করা শুরু করছি দেখি কতগুলো ধরতে পারি।

আমরা এখন পর্যন্ত ১০ মামলা ১২২ জনকে গ্রেফতার করেছি। তার মধ্যে ১০ জন গডফাদার রয়েছে বলে জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সিআইডিই প্রথম মাদক সম্পৃক্ত মানিলন্ডারিং মামলার তদন্তে গভীরে প্রবেশ করে মাদক ব্যবসায়ী ও গডফাদারদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে এবং তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও ব্যাংকে থাকা অর্থ ফ্রিজ করতে সক্ষম হয়েছে।

২০২১ সালে ৭৯ হাজার ৬৭৫টি, ২০২২ সালে ৮২ হাজার ৬৭২টি এবং ২০২৩ সালে ৭৬ হাজার ৪০৩টি মাদক মামলা রুজু হয়েছে। বাংলাদেশে গড়ে প্রতিবছর প্রায় ৮০ হাজার মাদক উদ্ধার সংক্রান্ত মামলা হয়।

প্রাথমকিভাবে সিআইডি ৩৫টি মামলা তদন্ত করে মামলার মূল হোতা বা গডফাদারদের মাদক ব্যবসা হতে অবৈধভাবে অর্জিত ব্যাংক একাউন্টে জমাকৃত অর্থ, ক্রয়কৃত জমি, বাড়ি ও ফ্ল্যাটসহ লন্ডারকৃত বিভিন্ন স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির সন্ধান পায়। এ সকল মামলায় অবৈধভাবে অর্জিত অর্থের পরিমাণ প্রায় ১৭৮-৪৪ কোটি টাকা।

সিআইডি ইতোমধ্যে ৩৫ মামলার মধ্যে ৩টি মামলায় গডফাদারদের ৯.১৪ একর জমি ও ২টি বাড়ি যার মূল্য অনুমান ৮.১১ কোটি টাকা ক্রোক এবং মাদক সংক্রান্ত মানিলন্ডারিং বিভিন্ন মামলায় ব্যাংকে গচ্ছিত এক কোটি ১ লক্ষ ২৩ হাজার ৪২৫ টাকা ফ্রিজ করেছে। আরও ৩৫.১৭৩ একর জমি, ১২টি বাড়ি ও ১টি গাড়ি যার মূল্য অনুমান ৩৬.৮২ কোটি টাকা ক্রোকের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...