সব
স্বদেশ বিদেশ ডট কম
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি দুই প্রতিবেশী দেশকে সর্বোচ্চ ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে করে এই উত্তেজনা আরও বাড়তে না পারে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) মধ্যরাতে জাতিসংঘ মহাসচিবের বার্তা সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন তার মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক। তিনি বলেন, পরিস্থিতির ওপর জাতিসংঘ নিবিড়ভাবে নজর রাখছে এবং দক্ষিণ এশিয়ায় গড়ে ওঠা এই সংকটময় পরিস্থিতি নিয়ে মহাসচিব অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।
ডুজারিক জানান, ভারত ও পাকিস্তানের সাম্প্রতিক কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত ও পাল্টা পদক্ষেপের কারণে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক দ্রুত খারাপের দিকে যাচ্ছে। এই পটভূমিতে জাতিসংঘ মহাসচিব দুই দেশকে ‘সর্বোচ্চ ধৈর্য’ অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যেকোনো সমস্যা অর্থপূর্ণ আলোচনা এবং পারস্পরিক সম্পৃক্ততার ভিত্তিতে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধান সম্ভব। আমরা বিশ্বাস করি, সেটিই হওয়া উচিত।’ তিনি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে সামাল দিতে শান্তিপূর্ণ কূটনৈতিক পথ অনুসরণের আহ্বান জানান।
ভিসা বাতিল, সীমান্ত বন্ধ: পাল্টাপাল্টি কূটনৈতিক যুদ্ধে ভারত-পাকিস্তান গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগামের বৈসারণ উপত্যকায় বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ২৫ জন ভারতীয় এবং একজন নেপালের নাগরিক। ভারত অভিযোগ করেছে, এই হামলার পেছনে পাকিস্তান-ভিত্তিক একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর হাত রয়েছে।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ভারত পরদিন বুধবার (২৩ এপ্রিল) পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া কিছু পদক্ষেপ নেয়। এর মধ্যে ছিল পাকিস্তানের নাগরিকদের ভারতে দেয়া সব ধরনের ভিসা বাতিল, দিল্লিতে নিযুক্ত পাকিস্তানি কূটনীতিকদের সংখ্যা কমানো, আটারি–ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ এবং ১৯৬০ সালের ঐতিহাসিক সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা।
ভারতের এসব পদক্ষেপের জবাবে ইসলামাবাদও একই রকম কড়াকড়ি আরোপ করে। পাকিস্তান ভারতের নাগরিকদের দেয়া সব ভিসা বাতিল করে এবং ভারতীয় কূটনীতিকদের বহিষ্কারের নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য স্থগিত করার পাশাপাশি দেশটির উড়োজাহাজের জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমাও বন্ধ করে দেয়।
দুই দেশের এমন পাল্টাপাল্টি সিদ্ধান্তে দক্ষিণ এশিয়ায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পর্যবেক্ষকদের আশঙ্কা, পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণে না আনা যায়, তাহলে তা সীমিত সামরিক সংঘাতে গড়াতে পারে। জাতিসংঘ মহাসচিবের বার্তা এই সংকট নিরসনের জন্য একটি কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। সূত্র: আল-জাজিরা
Developed by:
Helpline : +88 01712 88 65 03