দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে সিরাজগঞ্জের লুঙ্গি-গামছা

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ১৩ মে ২০২৫, ২:২৪ অপরাহ্ণ

যমুনাবিধৌত সিরাজগঞ্জের তৈরী লুঙ্গি, গামছা এখন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। তাঁত কুঞ্জ হিসেবে পরিচিত সিরাজগঞ্জের সদর, বেলকুচি, এনায়েতপুর, শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া ও চৌহালী উপজেলায় পাওয়ার লুম ও হ্যান্ডলুম মিলে অন্তত আড়াই লক্ষাধিক তাঁত রয়েছে। এখানে তৈরি হয় আন্তর্জাতিক মানের লুঙ্গি, গামছা ও শাড়ি কাপড়। এখানকার উৎপাদিত লুঙ্গি, গামছা ও শাড়ির কদর দেশ ও দেশের বাইরে দিন দিন বেড়েই চলেছে। জেলার অর্থনৈতিক চালিকাশক্তির অন্যতম এই তাঁত শিল্পটির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত রয়েছে প্রায় ১০ লক্ষাধিক মানুষ। বছরে প্রায় ১৫শত কোটি টাকার তাঁত পণ্য উৎপাদিত হয় এই জেলায়। এ কারণে জেলার ব্র্যান্ডিং ঘোষণা করা হয় তাঁতশিল্পকে নাম দেয়া হয়েছে ‘‘তাঁতকুঞ্জ সিরাজগঞ্জ”।

সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁতের খট খট শব্দে মুখরিত হয়ে উঠতো সিরাজগঞ্জের তাঁত পল্লীগুলো। কালের পরিক্রমায় এবং আধুনিকতার ছোয়ায় তাঁত কারখানাগুলোতে। উৎপাদন বাড়াতে প্রতিটি কারখানায় যন্ত্র চালিত পাওয়ার লুম দিয়ে লুঙ্গি আর গামছা তৈরি করা হচ্ছে। তামাই গ্রামের তাঁত শ্রমিক হানিফ, আলাউদ্দিন, রুবেল, সামাদ, এবং রোকেয়া ও নূরজাহান জানান, বিগত নববর্ষ ও ঈদের পূর্বে এখানকার তাঁত মালিকরা চালু করেছে পাওয়ারলুম। ফলে আমাদের ব্যস্ততা বেড়েছে। এখন প্রতিদিনই কাজ হচ্ছে। কিছুদিন আগেও মাঝে মাঝে তাঁতবন্ধ থাকতো তখন সংসারে অভাব অনটন লেগে থাকতো। অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করতে হতো আমাদের। ছেলে মেয়ের পড়াশোনা চালানো কঠিন হয়ে পড়তো। এখন তাঁত চালু হওয়ায় আমাদের অভাব অনেকটাই দুর হয়েছে।

জেলার এনায়েতপুর এলাকার তাঁত মালিক ইমরান খান, আলহাজ্ব সাইফুল ইসলাম বলেন, এখানে উৎপাদিত তাঁতের লুঙ্গি ও গামছার দেশব্যাপী ব্যপক চাহিদা রয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যপারীরা এসে বিভিন্ন হাট থেকে কিনে নিয়ে যায়। তিনি জানান আমাদের উৎপাদিত পণ্য বিভিন্ন কোম্পানী গুলি তাদের নিজস্ব পণ্য বলে চালিয়ে দেয়।

বেলকুচি তাঁত মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বৈদ্যনাথ বলেন, এই জেলায় আড়াই লক্ষাধিক তাতে প্রায় ১০ লাখ মানুষ কর্মরত রয়েছে। এদের হাতে উৎপাদিত উন্নত মানের তাঁত সামগ্রী উৎপন্ন হচ্ছে যার সুনাম দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশে পৌছেছে। এটা আমাদের গর্বের বিষয়। এর পর আমাদের উৎপাদিত লুঙ্গি ও গামছা জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আমরা আরো গর্ববোধ করি। এই স্বীকৃতি পাওয়ায় আমরা আনন্দিত ও গর্ববোধ করি।

তাঁত মালিক সমিতির সভাপতি হাজি আব্দুল বাকি বলেন, জিআই পণ্যের স্বীকৃতি আমাদের দীর্ঘদিনের পরিশ্রম ও চেষ্টার ফল। এতে আমাদের ব্যবসার আরো প্রসার ঘটবে বলে আশা করি। তিনি বলেন, আমাদের উৎপাদিত লুঙ্গি গামছা দেশের বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানি কিনে নিয়ে বিদেশে রপ্তানি করছে। সৌদি আরব, বৃটেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে আমাদের সিরাজগঞ্জে উৎপাদিত তাত পণ্য এতে আমরা গর্ববোধ করি।

গত ৩০ এপ্রিল তাঁত বোর্ড বাংলাদেশ চেয়ারম্যান দেবাশীষ নাগ (যুগ্ম সচিব) সদস্য, (সমিতি বাজার জাত করন বিভাগ) বাংলাদেশ এই সনদ গ্রহণ করেন।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...