‘এমন বাংলাদেশ গড়তে হবে যেখানে মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ন হবে না’

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ১৬ আগস্ট ২০২৫, ৭:২৯ অপরাহ্ণ

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অসংখ্য তরুণ, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ জীবন দিয়েছেন। অনেকে চোখ, হাত-পা হারিয়ে আজীবন পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। তাদের ত্যাগ স্মরণ রেখে এমন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে, যেখানে মানুষের অধিকার কখনো ক্ষুণ্ন হবে না।

শনিবার সকালে রাজধানীর ঢাকা সেন্ট্রাল গার্লস হাই স্কুলে নবনির্মিত ছয়তলা একাডেমিক ভবনের উদ্বোধন ও এসএসসি-২০২৫ কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ফরিদা আখতার বলেন, বেগম রোকেয়া মুসলিম মেয়েদের জন্য স্বাধীন পরিবেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন। সেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালিত হতো। কেবল বই পড়ে সবকিছু জানা সম্ভব নয়, কারণ ইতিহাস বারবার বিকৃত হয়েছে। তাই শিক্ষকদের দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের প্রকৃত শিক্ষা দিয়ে দেশ ও জাতি সম্পর্কে সচেতন করে তোলা।

নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্কুলের ভেতরে ও বাইরে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্ব নিতে হবে। ইভটিজিংয়ের কারণে মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে—নতুন বাংলাদেশে তা হতে দেওয়া যাবে না।

পরিবেশ রক্ষায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, সপ্তাহে অন্তত একদিন স্কুল ও আশপাশে পরিবেশ সুরক্ষায় কার্যক্রম চালাতে হবে। একইসঙ্গে পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে হবে, কারণ এগুলো মানব স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

পুষ্টি নিরাপত্তা প্রসঙ্গে ফরিদা আখতার বলেন, বর্তমানে দেশে মাথাপিছু মাংস খাওয়ার পরিমাণ মাত্র ২০০ গ্রাম। এখনও অনেক পরিবার সপ্তাহে বা মাসে একদিন মাংস খেতে পারে। দৈনিক প্রায় ছয় কোটি ডিম উৎপাদন হলেও তা দিয়ে চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। তবে মাছ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তুলনামূলক ভালো অবস্থানে আছে। মাছ, মাংস, দুধ ও ডিম আমাদের পুষ্টির প্রধান উৎস। তাই শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি পুষ্টির দিকটিও গুরুত্ব দিতে হবে।

নারী শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসী ও আত্মপ্রত্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নারী নির্যাতন আইন সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে এবং বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে শিক্ষক, অভিভাবক ও সমাজকে একসঙ্গে সচেতন হতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হামিদুর রহমান হামিদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. ওয়ারেছ আনসারী এবং ঢাকা মেট্রোর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মেনহাজুল হক।

এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরজাহান বেগম। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন নওশাবা ইসলাম।

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

Developed by: Web Design & IT Company in Bangladesh