শীতকালীন কাশি কমাতে ঘরোয়া উপায়

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ৮ ডিসেম্বর ২০২০, ১১:২৩ পূর্বাহ্ণ

প্রকৃতিতে শীতের আগমন। শীতকাল মানেই অসুখ-বিসুখের সময় তথা সংক্রমণের মৌসুম। ঋতু পরিবর্তনের এ সময়ে শারীরিক যেসব সমস্যা হিসেবে দেখা যায় তার মধ্যে অন্যতম হলো কাশি। তাই শীতে শ্বাসতন্ত্রীয় সংক্রমণের গুরুতর জটিলতা এড়াতে জীবনযাপনে বাড়তি সচেতনতা প্রয়োজন হয়।

শ্বাসতন্ত্রীয় ঠাণ্ডা-ফ্লু, করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও শ্বাসতন্ত্রের অন্যান্য সংক্রমণে একটি প্রচলিত উপসর্গ হলো কাশি। কিছু ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করেই ভাইরাস জনিত কাশি উপশম করা যায়। জেনে নিন, এমনকিছু কার্যকর ঘরোয়া উপায়।

লেবু:
কাশি কমাতে অন্যতম প্রচলিত প্রাকৃতিক চিকিৎসা হলো লেবু চাবানো। লেবুর রস কফকে পাতলা করতে ও বের করে দিতে সাহায্য করে। দ্রুত কাশি কমাতে একটি সতেজ লেবুকে চারটি স্লাইস করে গোল মরিচের গুঁড়া ও লবণ লাগিয়ে চাবাতে থাকুন।

তিসি বীজের গুড়া:
তিসি বীজের গুড়াকে পানিতে মেশালে মিউকাসের মতো পদার্থ তৈরি হয়, যা কফ রিফ্লেক্সকে শান্ত করে শুষ্ক কাশি কমাতে পারে। মধুতেও একই প্রতিক্রিয়া রয়েছে। কাশির সঙ্গে কফ বের হলে তিসি বীজের গুঁড়া ও মধুর মিশ্রণে লেবুর রসও মেশাতে পারেন, কারণ লেবুর রস কফ কমায়। দুই টেবিল চামচ তিসি বীজের গুঁড়াকে পানিতে মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। তারপর ছেঁকে এর সঙ্গে মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।

গোল মরিচের চা:
ট্র্যাডিশনাল চাইনিজ মেডিসিনে কাশি নিরাময়কারী হিসেবে গোল মরিচের চায়ের ব্যবহার দেখা গেছে। গোল মরিচ সংবহন ও শ্লেষ্মার প্রবাহকে উদ্দীপ্ত করে ভেজা কাশি (যে কাশিতে কফ অনুভূত হয়) কমিয়ে থাকে। এই চা তৈরি করতে একটি মগে এক চা-চামচ গোল মরিচের গুঁড়া ও দুই টেবিল চামচ মধু নিন। এবার মগটিতে ফুটন্ত পানি (২৫০ মিলিলিটার) ঢেলে ১৫ মিনিট রেখে দিন। অতঃপর ছেঁকে পান করুন। কফ উৎপাদনকারী কাশিতে এই পানীয় খুবই ভালো কাজ করে, কিন্তু এটা শুষ্ক কাশির জন্য প্রযোজ্য নয়।

দুধ-মধু:
কাশি কমাতে দুধ ও মধুর সমন্বয়ও কার্যকরী হতে পারে। একটি ইতালীয় গবেষণায় এক-তৃতীয়াংশ দুধের সঙ্গে দুই চা-চামচ মধুর মিশ্রণ ব্যবহারে ওটিসি ওষুধ ডেক্সট্রোমিথরফান ও লিভোড্রোপ্রপাইজিনের মতোই কার্যকারিতা পাওয়া গেছে। গবেষণাটি শিশুদের ওপর চালানো হয়েছে। শিশুর বয়স এক বছরের কম হলে মধু খাওয়াতে যাবেন না, কারণ ইনফ্যান্ট বটুলিজমের আশঙ্কা রয়েছে।

কাঠবাদামের গুড়া:
কিছু প্রাচীন ঐতিহ্য অনুসারে, কাঠবাদামের গুঁড়া শ্বাসনালীর সমস্যা বা কাশি কমাতে পারে। শীতকালীন সংক্রমণের কাশি কমাতে এক কাপ কমলার রসে কয়েক চা-চামচ কাঠবাদামের গুঁড়া মিশিয়ে খেতে পারেন।

পানি:
কাশি আসলে প্রচুর পানি পান করতে থাকুন। কাশির অন্যতম সহজ প্রাকৃতিক চিকিৎসা হলো পানি। প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সে প্রকাশিত একটি ল্যাবরেটরি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রচুর পানি পান করাতে ফুসফুসের আঠালো শ্লেষ্মা বা কফ বেরিয়ে এসেছে। এছাড়া পানি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে বলে যেকোনো সংক্রমণের বিরুদ্ধে সহজেই লড়াই করা যায়।

পিপারমিন্ট টি:
বিশেষজ্ঞদের মতে, পিপারমিন্ট এসেনশিয়াল অয়েলের ভাপ নিলে শ্বাসনালীর পেশিতে প্রশান্তিদায়ক প্রভাব পড়ে। এটা শ্বাসপ্রশ্বাস সহজ করে ও কাশি কমায়। এছাড়া শারীরিক শিথিলতাও পাওয়া যায়। পিপারমিন্ট টি পান করেও অনুরূপ প্রতিক্রিয়া পেতে পারেন। তাই শীতকালীন কাশি কমাতে কুসুম গরম পিপারমিন্ট টি পানের কথা ভাবতে পারেন।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...