সব
স্বদেশ বিদেশ ডট কম
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘দুনিয়াকি ইয়ে মুসাফির’ নামে একটি গ্রুপে যুক্ত হয়ে ধর্মীয় অপব্যাখ্যার শিকার হন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চার তরুণ ও পাঁচ তরুণী। তারা ধর্মীয় ভুল ব্যাখ্যায় উগ্রবাদী চিন্তায় উদ্বুদ্ধ হয়ে পাহাড়ি এলাকায় যেতে ঘর ছাড়েন। পরে তারা রাঙ্গামাটি পৌঁছে প্রত্যাশামতো পরিবেশ না পেয়ে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে চট্টগ্রামে ফিরে আসেন। এরপর তাদের মধ্যে এক তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। এ সময় বিষয়টি জানতে পেরে ৯ জনকেই হেফাজতে নেয় র্যাব।
সোমবার বেলা ১২টার দিকে রাজধানীতে র্যাব সদর দপ্তরে এক অনুষ্ঠানে পরিবারের কাছে তাদের হস্তান্তর করে র্যাব।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন র্যাব মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন। ওই সময় ৯ তরুণ-তরুণীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান, বই উপহার দেন এবং প্রত্যেককে নগদ ১০ হাজার টাকা করে দেন তিনি।
র্যাব মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন বলেন, যারা ফিরে এসেছেন, তাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ আছে। তারা সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সোনার বাংলা বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবেন।
তিনি বলেন, ধর্মের ভুল ব্যাখ্যায় অনেক তরুণ-তরুণী উগ্রবাদের পথে যাচ্ছেন। সন্তানেরা যেন ভুল পথে না যায়, সে জন্য প্রত্যেক শ্রেণি-পেশার মানুষ ও মা–বাবাকে যত্নবান হতে হবে।
ফিরে আসা ৯ তরুণ-তরুণী হলেন—আবু বকর সিদ্দিক, ফয়সাল হোসেন, ফারুক হোসেন, আলিফ খান, মুফলিয়া আক্তার, তাজকিয়া তাবাসসুম, জান্নাতুল ফেরদৌস, রুনা আক্তার ও কানিজ ফাতিমা ইফতি।
এ সময় র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্নেল কামরুল আহসান বলেন, গত ২২ ডিসেম্বর কথিত হিজরতের নামে তারা একযোগে ঘর ছেড়েছিলেন। গত ২৫ ডিসেম্বর তাদেরকে র্যাব হেফাজতে নেওয়া হয়। পরে তাদের কাউন্সেলিং করা হয়।
অনুষ্ঠানে ফিরে আসা ৯ তরুণ-তরুণীর একজন বলেন, ‘দুনিয়াকি ইয়ে মুসাফির’ নামে একটি ফেসবুকের মেসেঞ্জার গ্রুপে যুক্ত হওয়ার পর তাদের জঙ্গিবাদে নার্সিং করার। পরে তাদের টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত করা হয়। সেখানে ইসলামিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা এবং ইসলামিক ভিডিও পোস্ট করা হতো। এ ছাড়া ওই গ্রুপে বিভিন্ন লেখকের বই ডাউনলোড করা যেত। পরে গ্রুপের অ্যাডমিন তাদের নির্বিঘ্নে ধর্ম পালন করতে সব ফেৎনা থেকে দূরে সরে পাহাড়ি এলাকায় নিরিবিলি পরিবেশে যেতে বলে। এরপর তাদেরকে সেখানে যেতে উদ্বুদ্ধ করতে কোরআন ও হাদিসের বিভিন্ন ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে ফিরে আসা তরুণ-তরুণীরা জানান, তারা ৯ জনই কথিত হিজরত করার সিদ্ধান্ত নিয়ে গুগল ম্যাপের সাহায্যে রাঙামাটির পাহাড়ি এলাকায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সেই অনুযায়ী গত ২২ ডিসেম্বর বাড়ি ছেড়ে এসে তারা ২৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে মিলিত হন। সেখান থেকে বাসে করে রাঙামাটিতে যান এবং সেখানে নিরিবিল স্থান না পেয়ে আবার চট্টগ্রামে ফিরে আসেন। পরদিন তারা বান্দরবান যান, কিন্তু সেখানেও সুবিধাজনক স্থান না পেয়ে চট্টগ্রামে ফিরে আসেন। এরপর তারা চিন্তিত হয়ে পড়েন এবং এক তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে র্যাব বিষয়টি জানতে পারে এবং তাদের হেফাজতে নেয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন র্যাবের গোয়েন্দা প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান জুয়েল। এতে উপস্থিত ছিলেন র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) কর্নেল মো. কামরুল হাসান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ এবং মুফতি মানসুর আহমাদ।
Developed by: Helpline : +88 01712 88 65 03