‘বাংলাদেশ, অদম্য উন্নয়ন যাত্রা’হাউস অফ লর্ডসে স্টাডি সার্কেলের নতুন প্রতিবেদন

মতিয়ার চৌধুরী, লন্ডন,

  • প্রকাশিত: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:০৭ পূর্বাহ্ণ

লন্ডন-ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা স্টাডি সার্কেল গত ২২ ফেব্রুয়ারি বুধবার বিকেলে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ হাউস অফ লর্ডসে ‘বাংলাদেশ: অদম্য উন্নয়ন যাত্রা’ শীর্ষক এক সেমিনারে দেশটির সাম্প্রতিক উন্নয়নের একটি পরিসংখ্যান প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সংস্থার চেয়ারপার্সন সৈয়দ মোজাম্মেল আলীর সভাপতিত্বে হাউস অফ লর্ডসের অ্যাটলি অ্যান্ড রিড রুমে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী।

সৈয়দ মোজ্জামেল আলী তার সূচনা বক্তব্যে পরিসংখ্যান প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে বলেন, অনেক চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও বর্তমান সরকারের উদ্যোগে বাংলাদেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি হলেও এই অগ্রগতির খবর বাংলাদেশের বাইরে পৌঁছাচ্ছে না। ড. গওহর রিজভী তাঁর বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমীভাবে ভালো করছে। স্টাডি সার্কেলের উন্নয়ন পরিসংখ্যান প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বেশিরভাগ সেক্টরের পরিসংখ্যানগত তথ্যের সংক্ষিপ্তসার তুলে ধরা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে শিক্ষা, পরিবহন ও যোগাযোগ, নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্য, কোভিড-১৯ মোকাবেলা, বিদ্যুৎ উৎপাদন, কৃষি, আবাসন, কর্মসংস্থান, বাণিজ্য ও শিল্প, ইপিজেড এবং দশটি চলমান মেগা প্রকল্প।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রশংসা করে বক্তব্য রাখেন লর্ড পপট, রুশনারা আলী এমপি, ব্যারনেস উদ্দিন এবং বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম স্বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফ টাডি সার্কেল লন্ডনের এর অর্ডিনেটর জামালআহমদখান এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মেয়র ও কাউন্সিলরবৃন্দ। প্রতিবেদনটিতে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হবে, যার মাথাপিছু আয় হবে ১২ হাজার ৫শ মার্কিন ডলারের বেশি এবং বৈদেশিক বাণিজ্য হবে ৩শ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

যুক্তরাজ্যের সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ (সিইবিআর) এর তথ্য মতে বৃহৎ বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ করার ক্ষমতা, ক্রমবর্ধমান আরএমজি চাহিদা এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে বাংলাদেশ ২০৩৬ সালের মধ্যে ২৪টি বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে। স্টাডি সার্কেল সংস্থাটির মতে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, পরিবহন, কৃষি, শিল্প, বাণিজ্যসহ বিভিন্ন খাতে বর্তমান সরকারের সাফল্য অসামান্য। সরকারের এই অগ্রগতি বাংলাদেশকে নতুন ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। সেমিনার প্রতিবেদনে বলা হয়, ১২ ডিসেম্বর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস-২০২২’ উপলক্ষে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করতে কাজ করছে। তার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ টাস্কফোর্স গড়ে তোলার কাজ হচ্ছে।

স্টাডি সার্কেলের প্রতিবেদন মতে, স্মার্ট বাংলাদেশে সবকিছু নির্ভর করবে প্রযুক্তির ওপর। নাগরিকরা প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হবে এবং সমগ্র অর্থনীতি প্রযুক্তি দ্বারা পরিচালিত হবে। এ ব্যাপারে সরকার ও সমাজকে স্মার্ট করার প্রচেষ্টা ইতিমধ্যেই হাতে নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে গঠিত ‘স্টাডি সার্কেল’ প্রেস এবং মিডিয়াতে সেক্টরভিত্তিক উন্নয়ন প্রচারের জন্য গঠন করা হয়েছিল। তাদের প্রথম প্রতিবেদনটি ডিসেম্বর ২০১৮ সালে হাউস অফ লর্ডসে প্রকাশ করা হয়, তারপরে বেলফাস্ট, ওয়েলশ অ্যাসেম্বলি এবং উত্তর আয়ারল্যান্ড সংসদে।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...