জ্যঁ পিয়েরে ল্যাক্রোইক্সের বাংলাদেশ সফরের তাৎপর্য

মতিয়ার চৌধুরী, লন্ডন,

  • প্রকাশিত: ২৬ জুন ২০২৩, ৭:২৯ অপরাহ্ণ

চলতি বছরের ৫-৬ ডিসেম্বর ঘানার আক্রাতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ২০২৩ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনের মন্ত্রী পর্যায়ের সভা (ইউপিকেএম) আলোচনার প্রস্তুতিমূলক একটি অংশ হিসেবে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়েরে ল্যাক্রোইক্সকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী “জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে নারী” শীর্ষক আলোচনা সভায় অংশগ্রহণের জন্য তিনি চলতি মাসের ২৫-২৬ জুন ঢাকায় অবস্থান করে প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেছেন। শান্তিরক্ষী মিশনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি এবং তারা যেসকল সংঘাতপূর্ণ এলাকায় সেবা প্রদান করেন সেসকল জায়গায় তাদের প্রভাব বৃদ্ধি করার জন্য একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সদস্যদেশগুলির একত্রিত হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হচ্ছে জাতিসংঘের এই শান্তিরক্ষা মন্ত্রী পর্যায়ের সভা। মিশনগুলি আগের চেয়ে আরও বেশি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হওয়ায়, মন্ত্রী পর্যায়ের সভায় বিশেষ ভাবে গুরুত্ব আরোপ করা হবে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা, কৌশলগত যোগাযোগ (ভুল-বিভ্রান্তি এবং ঘৃণাত্মক বক্তব্যের সমাধান সহ), শারীরিক সুরক্ষা, শান্তিরক্ষীদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং শান্তিরক্ষায় অধিকতর হারে নারীদের অংশগ্রহণ।

বাংলাদেশ, কানাডা এবং উরুগুয়ে ঢাকায় শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নারীদের অংশগ্রহণ বিষয়ক প্রস্তুতিমূলক সম্মেলনের সহ-আয়োজক। সম্মেলনের সহ-আয়োজক হওয়া বাংলাদেশের জন্য একদিকে যেমন সম্মানের বিষয়, অন্যদিকে এটি একটি বড় সাফল্য। ১৯৮৮ সালে, বাংলাদেশ; নীল হেলমেট” পরিবারের একজন সদস্য হয়ে ওঠে যখন এর সামরিক কর্মীরা জাতিসংঘের দুটি অপারেশনে অংশগ্রহণ করে: ইরাকে জাতিসংঘের ইরান-ইরাক মিলিটারি অবজারভার গ্রুপ এবং নামিবিয়ায় জাতিসংঘের ট্রানজিশন অ্যাসিসট্যান্স গ্রুপ। যা এখন জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষা প্রচেষ্টার একটি অবিচ্ছেদ্য বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠেছে। বর্তমানে ৭২৩৩ জন শান্তিরক্ষী (ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত) ১১ টি মিশনে বিস্তৃত, যা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে একক দেশ হিসেবে সবচেয়ে বেশি শান্তিরক্ষী। এই নিবন্ধটি লেখার সময়, বিশ্বে মোট ৫৪টি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন পরিচালিত হয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশের ১,৮৩,৩৭৮ জন কর্মী অবদান রেখেছে।

২০০৩ সালে বাংলাদেশ সফরের সময়, সিয়েরা লিওনের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আহমেদ তেজান কাব্বা তার দেশে শান্তিরক্ষী মিশনে অবদান রাখার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান এবং আফ্রিকায় বাংলাদেশী সৈন্যদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। তারই প্রতিশ্রুতিতে সিয়েরা লিওন সরকার ২০০৪ সালে বাংলাকে তাদের অন্যতম একটি সরকারী ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। আবার, আইভরি কোস্টে কর্মরত বাংলাদেশী সৈন্যদের প্রায়ই মুনামি আমার বন্ধু বলে বাংলা বলেসম্বোধন করা হয়। অতি সম্প্রতি, ঢাকায় রাশিয়ার দূতাবাস এবারের আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসে বাংলাদেশের জনগণকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছে। ঢাকায় রাশিয়ান তাবাস বলেছে, ঢাকা সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং আস্থা আনয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে; যেহেতু এটি সৈন্যদের বৃহত্তম দাতা, আন্তর্জাতিকভাবে ৭০০০ এরও বেশি পোষাকধারী সৈন্য মোতায়েন রয়েছে। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে সিয়েরা লিয়ন, লাইবেরিয়া, আইভরিকোস্ট, কঙ্গো, হাইতি, লেবানন, সোমালিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি সশস্ত্র বাহিনী শান্তি রক্ষার পাশাপাশি ওই সব দেশের আর্থিক ও সামাজিক উন্নয়নে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ এবং অসহায় মানুষের পুনর্বাসনে সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা নীতি প্রণয়ন করা হয়েছিল পররাষ্ট্র নীতির নির্দেশনা অনুসারে সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো প্রতি বিদ্বেষ নয় যার কারণে বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা বাহিনী আগ্রাসী বাহিনী নয়। তারা সবসময় মানব কল্যাণমুখী। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কঠিন সময়সীমার ও বিপর্যয়ের মধ্যে দেশে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানবিক সহায়তায় হাত বাড়িয়ে দেওয়ার নজিরও কম নয়।শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ দেশের বেসামরিক-সামরিক সম্পর্কের জন্য ইতিবাচক সুফল বয়ে এনেছে।
এই বছরের প্রথম দিকে তুরস্কে সংগঠিত ভূমিকম্পে তুরস্কের আদিয়ামান শহরে ভেঙে পড়া ভবনের ভেতর থেকে একজনকে জীবিত এবং ১৫ জনের মরদেহ উদ্ধারসহ ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত ছয়টি ভবন অপসারণ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্ধারকারী দল দারুণ প্রশংসা কুঁড়িয়েছে।
শান্তি অপারেশন প্রশিক্ষণের সুবিধার্থে বাংলাদেশ ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ পিস সাপোর্ট অপারেশনস ট্রেনিং (BIPSOT) এবং ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পিস বিল্ডিং সেন্টার (BPC) প্রতিষ্ঠা করে। BIPSOT শান্তিরক্ষীদের অপারেশনাল প্রশিক্ষণ প্রদানে একটি চমৎকার কাজ করছে এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।

বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের ইতিবাচক এবং সক্রিয় ভূমিকার পাশাপাশি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখা, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদ মোকাবিলা, পার্বত্য চট্টগ্রামে বিচ্ছিন্নতাবাদ মোকাবিলায় মতো ঘটনাগুলি পর্যায়ক্রমে তাদের সাফল্যের মুকুটে নতুন পালক যোগ করেছে। ১৯৭১ সালের জনযুদ্ধের ভেতরে জন্ম বলেই এ দেশের সাধারণ মানুষের আবেগ, অনুভূতি, চেতনা সবকিছুর সঙ্গে সেনাবাহিনীর একটা আত্মিক সম্পর্ক
রয়েছে। বাংলাদেশে সংগঠিত প্রাকৃতিক দূর্যোগ প্রশমন ও দূর্যোগ পরবর্তী উদ্ধার অভিযানে চৌকস সেনাবাহিনী সদস্যগণ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। একুশ শতকের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় করোনা মহামারী পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা অপরিসীম।
মহিমা এবং প্রতিপত্তি মহান ত্যাগ ছাড়া আসে না। জাতিসংঘের বেশ কয়েকটি শান্তিরক্ষা মিশনের সময়, আনুমানিক ১৬৬ জনেরও বেশি বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছে ন। এই বীর আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশের ১৩৪ জন শান্তিরক্ষীকে মর্যাদাপূর্ণ মরণোত্তর “দাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল” প্রদান করা হয়েছে।
জাতিসংঘ শান্তি কার্যক্রমের মাধ্যমে বৈশ্বিক শান্তির প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতির মূল প্রেরণা খুঁজে বের করার জন্য, স্মরণ করা যেতে পারে ১৯৭৪ সালের জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ভাষণ, যেখানে বঙ্গবন্ধু বিশ্ব শান্তি বজায় রাখার জন্য তার অটল অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন। বাংলাদেশ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে জাতিসংঘ মিশনে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠিয়ে বিশ্বশান্তি সমুন্নত রাখার বঙ্গবন্ধুর সেই বক্তব্যকে বৈধতা দিয়েছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশ যে ভূমিকা পালন করেছে তা সম্মান ও কৃতিত্বের। বিশ্বের প্রায় সব বৈরী এবং সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীরা তাদের পদচিহ্ন অঙ্কিত করেছেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সবচেয়ে বড় অবদানকারী হিসেবে বাংলাদেশ এমন সব দুঃসহ সাফল্যের কৃতিত্বের অজানা গল্প রচিত করেছে যা বিশ্বের কাছে তুলে ধরা দরকার।

এখন মূল প্রশ্ন হলো বাংলাদেশের উপর এই সফরের কি প্রভাব পড়তে পারে? নিঃসন্দেহে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ল্যাক্রোইক্সের সফর বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ল্যাক্রোইক্সের সফরটি পূর্বনির্ধারিত এবং জাতিসংঘের শান্তি কার্যক্রম পরিচালনার একটি অংশ। ল্যাক্রোইক্সের সফর বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক ফলাফল বয়ে আনতে সক্ষম।প্রথমত, ল্যাক্রোইক্সের সফর জাতিসংঘ শান্তি অভিযানে বাংলাদেশের বিশ্ব নেতৃত্বের প্রতিফলন ঘটায়। বাংলাদেশ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে জাতিসংঘের বর্তমান শান্তিরক্ষা মিশনে শুধুমাত্র সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শান্তিরক্ষী পাঠায়নি, জাতিসংঘের শান্তি কার্যক্রমের নীতি-নির্ধারণ প্রক্রিয়াতেও নেতৃত্ব দিয়েছে। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব, কফি আনান বাংলাদেশকে ব্যাখ্যা করেছেন জাতিসংঘের একটি মডেল সদস্য, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে নেতৃত্ব প্রদানে বিচক্ষণতা সম্পন্ন এবং শান্তিরক্ষা ও মানবিক কার্যক্রমে সক্রিয় একটি দেশ হিসেবে।
দ্বিতীয়ত, এই সফর বাংলাদেশ এবং জাতিসংঘের ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্বের প্রমাণ দেয়, বিশেষ করে শান্তিরক্ষার ক্ষেত্রে। ১৮৩,০০০ এরও বেশি বাংলাদেশি শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ১৬৬ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ, বাংলাদেশকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় শান্তিরক্ষী দেশ হিসেবে মর্যাদা দিয়েছে। জাতিসংঘ শান্তি অভিযানের সদর দফতর এবং ফিল্ড মিশনে বাংলাদেশ মধ্য ও শীর্ষ পর্যায়ে নেতৃত্ব প্রদানে অতুলনীয় খ্যাতি, পরিশ্রম এবং নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে।তৃতীয়ত, এই সফর বাংলাদেশ থেকে আরও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী পাঠানোর অঙ্গীকারের নতুনসম্ভাবনার সূচনা রচনা করবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদেরসক্ষমতার প্রতি যে সম্মান ও বিশ্বাস রয়েছে তার স্বীকৃতি প্রদানপূর্বক জাতিসংঘ শান্তি মিশনেবাংলাদেশি সৈন্যদের সংখ্যা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
চতুর্থত, স্বাগতিক দেশগুলোতে ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি ও হুমকির কারণে কিছু সদস্য রাষ্ট্র যখন ফিল্ড মিশন থেকে তাদের শান্তিরক্ষীদের প্রত্যাহার করছে তখন জাতিসংঘ স্বাভাবিক ভাবেই বাংলাদেশ থেকে আরও সৈন্য মোতায়েন খুঁজছে। জনাব ল্যাক্রোইক্স অবশ্যই ভবিষ্যতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের জন্য পৃথিবীর একটি শীর্ষস্থানীয় শান্তিরক্ষী দেশ, বাংলাদেশের কাছ থেকে আরও প্রতিশ্রুতি পাওয়ার চেষ্টা করবেন।পঞ্চমত, জাতিসংঘ নেতৃত্ব- মিশন এলাকায় বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের জনপ্রিয়তা সম্পর্কেঅবগত। আয়োজক দেশগুলির স্থানীয় সম্প্রদায়গুলি শান্তিরক্ষীদের কর্মক্ষমতা এবং আচরণেরচূড়ান্ত মূল্যায়নকারী। স্থানীয় জনগণ বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের অসাধারণ সাহসী, আত্মত্যাগী,বন্ধুত্বপূর্ণ এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলে মনে করেন।

অবশেষে, ল্যাক্রোইক্সের সফর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের উপর আস্থা প্রদর্শন করে যিনি শান্তিরক্ষী মোতায়েনের বিষয়ে ব্যতিক্রমীভাবে সক্রিয় ছিলেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দুর্গম ভূখণ্ডে দ্রুত মোতায়েন করার জন্য জাতিসংঘের শান্তি অভিযানের শীর্ষ নেতৃত্বকে অনুরোধ করার জন্য বেশ কয়েকবার সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মালি তার মধ্যে একটি উজ্জ্বল উদাহরণ।ল্যাক্রোইক্সের ঢাকা সফরকে ভুল বোঝার বা বিভ্রান্ত করার উপায় নেই। এটা বাংলাদেশেরঅব্যাহত কূটনৈতিক সাফল্যের একটি অংশ। এটি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কূটনীতিতে বাংলাদেশেরনেতৃত্ব প্রদর্শন করে। এমনকি সবচেয়ে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও, (যেমন কম্বোডিয়া বা মালি বা ডিআরসি), বাংলাদেশ স্বাগতিক দেশগুলিতে অপ্রতিরোধ্য উপাদানগুলির সবচেয়ে গুরুতর শারীরিকআক্রমণের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট এলেন সিরলিফ বাংলাদেশীশান্তিরক্ষীদের প্রশংসা করে বলেছেন: বাংলাদেশী দল তার সুরক্ষা আদেশের বাইরে চলে গেছেএবং দেশের জনশক্তির সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে। জাতির গৌরব অর্জনের জন্যশান্তিরক্ষীরা কঠোর পরিশ্রম এবং মহান ত্যাগ স্বীকার করে। বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীরা তাদের পেশাদারিত্ব এবং উৎসর্গ ছাড়াও তাদের বন্ধুত্ব, প্রাকৃতিক আতিথেয়তা এবং মানবিক মনোভাবের জন্য বিখ্যাত। সাহসী এই শান্তিরক্ষীরা আমাদের অবিশ্বাস্য গৌরব এনে দিয়েছে এবং জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ডিপার্টমেন্ট অফ পিস অপারেশনস, ল্যাক্রোইক্সের আসন্ন সফর তার প্রমাণ।পরিশেষে বলতে চাই, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের সাফল্যই যেনোকবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার ভাষায় প্রমাণ করে, বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা “জ্বলে পুড়েমরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়”। জনাব ল্যাক্রোইক্সের আসন্ন বাংলাদেশ সফর উপলক্ষেএকজন বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে তার কাছে বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের বৈশ্বিক ইতিবাচকস্বীকৃতি বৃদ্ধি, তাদের অংগ্রহণের আরও সুযোগ বৃদ্ধি সহ শান্তিরক্ষী মিশনে অভিন্ন বেতনকাঠামো প্রণয়ন, তাদের নেতৃত্বস্থানীয় পদে সুযোগ বৃদ্ধি সহ তাদের আত্মরক্ষার সুবিধার জন্য প্রয়োজনীয় উন্নত প্রযুক্তি এবং প্রশিক্ষণ বাড়ানো উচিৎ। কারণ, ভিন্ন বেতন কাঠামো বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের সাথে অন্যান্য দেশের শান্তিরক্ষীদের আশরাফ আতরাফের পার্থক্য গড়ে দেয়, যা বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের জন্য অবমাননাকর।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...