সব
আন্তর্জাতিক ডেস্ক,
ইরানের রাজধানী তেহরানে হত্যার শিকার হয়েছেন হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়া। এক বিবৃতিতে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে হামাস। তবে কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে সে বিষয়ে এখনো বিস্তারিত তথ্য জানায়নি ইরান। তবে দেশটির ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে।
এদিকে গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলার পর নতুন করে সবার নজরে আসে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তখন থেকেই বিশ্ব গণমাধ্যমে বহুল চর্চিত একটি নাম ইসমাইল হানিয়া। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক কে ইসমাইল হানিয়া।
ইসমাইল হানিয়া হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধানের পদে থাকলেও তাকেই এই গোষ্ঠীর শীর্ষ নেতা মনে করা হয়। তার পুরো নাম ইসমাইল আবদুস সালাম আহমেদ হানিয়া। তিনি ১৯৬৩ সালের ২৯ জানুয়ারি গাজা উপত্যকার আল-শাতি শরণার্থীশিবিরে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তার আদি নিবাস ইসরাইলের অন্তর্গত আশকেলনে। ১৯৪৮ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধের সময় তার বাবা মা আশকেলন ছেড়ে উদ্বাস্তু হন।
শিক্ষাজীবনের প্রথমে হানিয়া গাজার আল-আজহার ইনস্টিটিউটে এবং পরে গাজার ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। সেখানেই তিনি আরবি সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র থাকাকালীন তিনি হামাসের অগ্রদূত ইসলামিক ছাত্র ব্লকে যোগদান করেন।
গত শতকের আশির দশকে হামাসের উত্থানকালে ফিলিস্তিনি সুন্নি মুসলিমদের এই রাজনৈতিক ও সামরিক আন্দোলনের সামনের কাতারে ছিলেন ইসমাইল হানিয়া। ১৯৮৯ সালে তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় ইসরাইল। এরপর ১৯৯২ সালে আরও কয়েকজন হামাস নেতার সঙ্গে হানিয়াকে ইসরাইল ও লেবানন সীমান্তের শূন্যরেখায় ছেড়ে দেয় ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ।
দীর্ঘ এক বছর নির্বাসনে থাকার পর ইসমাইল হানিয়া গাজায় ফেরেন। ১৯৯৭ সালে হামাসের মতাদর্শিক গুরুর কার্যালয়ের প্রধানের দায়িত্ব পান তিনি। এতে হামাসে তার পদমর্যাদা বাড়ে।
ফিলিস্তিনের জাতীয় নির্বাচনে হামাস বেশির ভাগ আসনে জয় পাওয়ার পর ২০০৬ সালে ইসমাইল হানিয়াকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ দেন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। কিন্তু সপ্তাহব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর গাজায় মাহমুদ আব্বাসের দল ফাত্তাহর কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হলে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে হানিয়াকে সরিয়ে দেয়া হয়। তবে হানিয়া ওই সিদ্ধান্তকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, তার সরকার ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি তাদের জাতীয় দায়িত্ব থেকে সরবে না এবং তিনি গাজা শাসন করতে থাকেন।
পরে ২০১৭ সালে ইসমাইল হানিয়া হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান নির্বাচিত হন। পরের বছর ইসমাইল হানিয়াকে ‘সন্ত্রাসী’ তকমা দেয় মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। গত কয়েক বছর ধরে ইসমাইল হানিয়া কাতারে বসবাস করে আসছিলেন। সূত্র: আলজাজিরা
Developed by: Helpline : +88 01712 88 65 03