সব
স্বদেশ বিদেশ ডট কম
রাঙামাটির কাউখালীতে এক শ্রমিক লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (২৮ আগস্ট) উপজেলায় চাঞরি বাজারে আসলে হত্যার ঘটনা ঘটে।
পরে বিকালে পাশের রাউজানের চারা বটতল চৌধুরী মার্কেট এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে স্বজনরা। পরে তা ময়নাতদন্তের জন্য রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয় বলে কাউখালী থানার ওসি রাজীব চন্দ্র কর জানান।
নিহত আব্দুল মান্নান (২৭) কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি সুগার মিল ডাকবাংলো এলাকার কবির আহাম্মদের ছেলে। নিহত আব্দুল মান্নানের ভায়রা কোরবান আলী ড্রাইভার জানিয়েছেন, পেশায় গাড়ি চালক আব্দুল মান্নান দুই স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, ৫ অগাস্ট সরকার পতনের পর কাউখালী ও বেতবুনিয়ার আওয়ামী লীগের প্রায় সব নেতাকর্মী আত্মগোপনে চলে যান। বুধবার ছিল চাঞরি বাজারে হাটবার। সকাল থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সেখানে আসেন। তখন প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের ওপর হামলা চালায়। মারধরের খবর পেয়ে বাজার করতে আসা শ্রমিক লীগ নেতা আব্দুল মান্নান সরে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
তিনি একটি অটোরিকশায় করে রাউজানের দিকে রওনা দেন। পথে গোদারপাড় এলাকায় তাকে আটক করে ব্যাপক মারধর করা হয়। পরে তাকে চারা বটতল এলাকায় ফেলে রেখে যায় হামলাকারীরা। এ সময় স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা আব্দুল মান্নানকে উদ্ধার করে রাউজান জে কে মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কোরবান আলী ড্রাইভার বলেন, মান্নানের বুকে এবং বাম হাতে জখমের চিহ্ন আছে। কাউখালী থানার পুলিশ বাড়ি থেকে লাশ নিয়ে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও কাউখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অংসুই প্রু চৌধুরী হামলার জন্য বিএনপি কর্মীদের দায়ী করে বলেন, একদল সন্ত্রাসী বাজারে আসা নিরীহ রাজনৈতিক কর্মী, সাধারণ পাহাড়ি ও অন্যান্যদের উপর গণহারে মারধর শুরু করে। তাদের প্রহারে অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। অনেকে বিক্রি করতে আনা পণ্য ফেলে জীবন বাঁচাতে পালিয়ে যায়। আমরা এই ঘটনার বিচার দাবি করি।
তিনি আরও বলেন, এদিন হাটে হেলাল উদ্দিন (৫৮), তৈয়ব হোসেন ঝুনু (৫২), উক্যচিং মারমা (৩৫), ব্যবসায়ী প্রদীপ দে (৬০), সেলুনের দোকানদার রাজীব শীলকে (৪২) ব্যাপক মারধর করা হয়।
তবে এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কাউখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, এখন এমন অবস্থা, অনেকেই আমাদের দলের নাম ভাঙ্গিয়ে অনেক কিছু করছে। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি বিনীত অনুরোধ করছি, তারা যেন কঠোর পদক্ষেপ নেন। আমরা কোনোভাবেই কাউকালীর শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট হোক এটা চাই না। যারা শান্তিপূর্ণ এলাকাতে অশান্তি সৃষ্টি করছে তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
কাউখালী থানার ওসি রাজীব চন্দ্র কর বলেন, ঘটনাস্থল রাউজান থানা এলাকায় হওয়ায় পরবর্তীতে সেখানে মামলা দায়ের করা হবে।
প্রসঙ্গত, সরকার পতনের পরদিন ৬ অগাস্ট কাউখালী উপজেলা সদরে ছাত্রলীগ নেতা শহীদুল ইসলাম সুমনকে পিটিয়ে হত্যা করে একদল লোক। এ নিয়ে রাজনৈতিক হামলায় আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের দুই নেতা নিহত হলেন। এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় পুড়িয়ে দেয়াসহ পুরো জেলায় প্রায় শতাধিক আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া, ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
Developed by: Helpline : +88 01712 88 65 03