নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে: তারেক রহমান

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫২ পূর্বাহ্ণ

স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের প্রেত্বাতারা এখন দেশের আনাচে কানাচে লুকিয়ে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করতে হবে।

সোমবার নীলফামারী জেলার সদর উপজেলার দু-বাছুরী দ্বি-মুখী দাখিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় ভার্চুয়ালি দেয়া বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে সদর উপজেলার লক্ষীচাপ ও টুপামারী ইউনিয়নে তৎকালীন স্থানীয় সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নুরের গাড়ী বহরে কথিত হামলার অভিযোগে শান্তির জনপদকে অশান্তিতে পরিনত করে নুর। এ সময় র‌্যাবের ক্রস ফায়ারে ততকালীন ২০ দলীয় জোটের ৪ জন নেতা কর্মী নিহত হয়। এদেরই একজন বিএনপি নেতা গোলাম রব্বানী। তার পরিবারের কাছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সহায়তায় এর নির্মিত বাড়ীর চাবী হস্তান্তর উপলক্ষে ’’আমরা বিএনপি পরিবার” আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখছিলেন।

প্রকৃত ভোটের মাধ্যেমে নির্বাচিতরাই কেবল মানুষের জন্য দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের কাজ করে বলে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, আন্দোলন সংগ্রামের পর এখন সম্মিলিতভাবে দেশ গড়তে হবে এবং দল নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হবার উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি। এ ব্যাপারে তিনি সবাইকে দৃঢ়ভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। দেশের বহু কাজ এখনো বাকী আছে বলে তিনি দেশে কৃষকের উন্নয়ন করতে খাল খননের প্রতি তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

তারেক রহমান বলেন , বিএনপি সরকার গঠন করলে তিনি সবাইকে নিয়ে ৩১ দফার আলোকে দেশ গড়ে তুলবেন বলে অঙ্গীকার ব্যাক্ত করেন। বিএনপি দেশের প্রতিটি দুর্যোগে সকল সময় মানুষের পাশে ছিল তাই বিএনপি‘র বড় শক্তি হল এদেশের জনগন বলে তিনি প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন।

এ সময় তিনি বলেন, গত ১৬ বছরে স্বৈারাচারী সরকার হাজারো মানুষকে হত্যা করেছে। লক্ষ লক্ষ পরিবারকে নির্যাতন করেছে। শুধুমাত্র পালিয়ে যাওয়ার এক সপ্তাহ আগেও এ পলাতক স্বৈরাচার প্রায় দুহাজারেরও বেশী মানুষকে হত্যা করেছে বলেও তিনি দাবী করেন। ক্ষমতা ধরে রাখতে প্রায় ৩০ হাজারেরও বেশী মানুষকে বিভিন্নভাবে জখম করেছে। এ সমস্ত শহীদ হওয়া মানুষজন সাধারন মানুষ ছিলেন, তারা রাজনৈতিক কর্মী ছিলেন। তাদের দোষ ছিল তারা মানুষের প্রতি স্বৈরাচারের দাবিয়ে রাখা অধিকার তথা দেশের মানুষের কথা বলার অধিকার, ভোটের অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের পক্ষে কথা বলছিল।

এজন্য তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে। ভবিষতের বাংলাদেশে তিনি এমন হত্যাকান্ড দেখতে চান না, চাই না কোন পরিবার দু:খ কষ্টের মধ্যে দিয়ে যাক। তারা যে কারনে আহত ও নিহত হয়েছে এখন তাদের সে অধিকার প্রতিষ্ঠার সময় উল্লেখ করে তারেক রহমান সবাইকে তা বাস্তবায়নের জন্য শপথ নেয়ার উদাত্ত আহ্বান জানান। আহত ও নিহতদের প্রতি সহানুভুতি জানিয়ে তিনি বলেন, নিহতদের হয়তো আমরা ফিরে পাব না, তবে আহতদের সুচিকিসার মাধ্যমে সুস্থ করা সম্ভব। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর সামনে দেশবাসীকে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দেশ এখন স্বৈরাচারমুক্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন সামনে একটি বড় যুদ্ধ আছে বলে তিনি হুশিয়ারি উচ্চারন করেন। তিনি বলেন, এদেশের মানুষ যে অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আন্দোলন করেছেন তা পর্যায়ক্রমে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শহীদরা রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থা, কৃষকের বিদ্যুত, ন্যায্য মুল্য সার, ফসলের ন্যায্য মুল্যর ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থার অব্যবস্থা ও অনিয়ম দুর করতে হবে। এছাড়া মানুষের স্বাভাবিক চলাফেরার নিশ্চয়তা প্রদান করা হবে। এগুলো সমাধানে সবাইকে নিয়ে তিনি নানামুখী উদ্দ্যোগ নিয়ে সবাইকে বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের প্রেত্বাতারা এখন দেশের আনাচে কানাচে লুকিয়ে রয়েছে বলে তিনি সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

তিনি সবাইকে নিয়ে একটি স্বাভাবিক দেশ, যেমন দেশ মানুষ কল্পনা করে তেমন একটি দেশ সকলে মিলে ও ঐক্যবদ্ধভাবে গড়তে হবে। সকলের মতামতের ভিত্তিতেই একটি সুখী ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়া সম্ভব বলে তিনি আশা করেন।

দল ও মতের পার্থক্য ভুলে দেশ ক্ষতিগ্রস্থ হবে, দেশের সামনে এগুনো বাধাগ্রস্থ হবে ও দেশের মানুষের চাওয়া পাওয়া বাধাগ্রস্থ হবে এমন কোন মত পার্থক্য তৈরী করা যাবে না মন্তব্য করে এ ব্যাপারে তিনি সবাইকে সচেততন থাকার আহ্বান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

স্বাস্থ্য খাতের বিষয়ে তিনি বলেন, এদেশের মানুষের সুচিকি’সার জন্য স্বাস্থ্য কার্ডের ব্যবস্থা করা হবে। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার অব্যবস্থার কথার উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষা ব্যাবস্থার আমুল পরিবর্তন করতে হবে। দেশকে উন্নত করতে হলে উন্নত দেশের সরকারের মত আমাদের দেশেও নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যেমে সরকার গঠন করতে হবে।

আমরা বিএনপি পরিবার এর আহব্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি‘র সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব এ্যাড. রুহুল কবির রিজভি, বিএনপি‘র সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, বিএনপি‘র কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জি. আশরাফ উদ্দিন প্রমুখ।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...