মা-ছেলের বুদ্ধিতে বেঁচে গেলো শত শত ট্রেনযাত্রী

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ২৮ ডিসেম্বর ২০২০, ৩:০৫ পূর্বাহ্ণ

বাড়ির একটি কাজে পাশের রেললাইন পার হচ্ছিলেন সহিদা বেগম। এ সময় রেললাইনে একটি ফাটল দেখতে পান। সাথে সাথে লাঠিতে লাল গেঞ্জি লাগিয়ে ছেলে সাজিদকে তা উড়াতে বলেন। এরপর লাল গেঞ্জি দেখে থেমে যায় ট্রেন। বড় দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যায় যাত্রীরা।

জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার খাসবাগুরী এলাকায় ঘটেছে এমন ঘটনা। এক ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর আবারো স্বাভাবিক হয় ট্রেন চলাচল।

কিশোর সাজিদ পাঁচবিবি উপজেলার খাসবাগুরী গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে। সে পাঁচবিবি উপজেলার একটি বেসরকারি কলেজে দশম শ্রেণিতে পড়াশুনা করছে।

এলাকাবাসীরা জানান, সাজিদের মা সহিদা বেগম বাড়ির একটি কাজে পাশের রেললাইন পার হচ্ছিলেন। এ সময় তিনি রেললাইনে ফাটল দেখতে পান। সাথে সাথে তিনি লাঠিতে লাল গেঞ্জি লাগিয়ে ছেলে সাজিদকে তা উড়াতে বলেন।

সাজিদ লাল গেঞ্জি উড়িয়ে থামিয়ে দেন পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তঃনগর দ্রুতযান ট্রেনটিকে। এতে বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় ট্রেনে থাকা শত শত যাত্রী। তার এমন মহৎ কাজকে অভিনন্দন জানিয়েছে গ্রামবাসী।

সাজিদ হোসেন বলেন, কোনো দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে, সেজন্য মায়ের নির্দেশে একটি লাল গেঞ্জি নিয়ে রেললাইনের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। পরে ট্রেন আসা দেখতে পেয়ে লাঠিতে লাগানো ওই লাল গেঞ্জিটি উড়ালে ট্রেন থেমে যায়।

সাজিদ আরো বলেন, প্রথমে একটু ভয় পেয়েছিলাম। তারপর যখন ট্রেনযাত্রী, ট্রেন চালক ও এলাকার অনেক মানুষ এসে খুব সাবাস দিল, তখন কী যে ভালো লাগলো, তা আর বোঝাতে পারবো না। সবচেয়ে বড় কথা, দুর্ঘটনার হাত থেকে ট্রেনটিকে রক্ষা করতে পারায় নিজেকে ধন্য মনে করছি।

রেললাইন মেরামত কর্মচারী রায়হান হোসেন বলেন, সাজিদের ট্রেন থামানোর পর উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে ঘটনাস্থলে এসে রেললাইনের ফাটল জোড়া লাগানো হয়েছে। এতে প্রায় এক ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

জয়পুরহাট রেল স্টেশন মাস্টার হাবিবুর রহমান জানান, লাল গেঞ্জি উড়িয়ে সাজিদ ট্রেন থামানোর কারণে একটি মারাত্মক দুর্ঘটনার হাত থেকে এ যাত্রায় রক্ষা পাওয়া গেলো। রেল বিভাগের পক্ষ থেকে কিশোর সাজিদকে ধন্যবাদ জানাই।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...